ফরিদগঞ্জ ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফরিদগঞ্জে এস.এস.সি পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান বন্ধ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:২৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ৫০৩ বার পড়া হয়েছে

ফরিদগঞ্জে এস.এস.সি পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান বন্ধ

স্কুল সময়ে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক পড়াচ্ছেন প্রাইভেট

শামীম হাসান : বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এস.এস.সি পরীক্ষার কেন্দ্রের দায়িত্বে তাই নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ। এমনি অহেতুক কারণ দেখিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১১ নং চরদুখিয়ার সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ রেখেছেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। বর্তমান সময়ে দুই দিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকার পরও এমন অযাচিত কারন দেখিয়ে শ্রেণী পাঠদান বন্ধ রাখায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। যেখানে উপজেলা সদরের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে এস.এস.সি পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে শ্রেণী পাঠদান চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত তার বিপরীতে পরীক্ষা কেন্দ্র না হওয়া সত্ত্বেও এমন অনিয়ম কার্যক্রম করছে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। একই সময়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে দেখে যায় ওই বিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক শাহজাহান ৫/৭ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রাইভেট পড়ানো অবস্থায় সাংবাদিকরা স্কুলে প্রবেশের বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত শিক্ষার্থীদের স্কুল ত্যাগ করার কথা বলেন।

২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে এমনি ভিন্ন চিত্র, সেখানে বন্ধ রাখা হয়েছে নিয়মিত শ্রেণীশিক্ষা কার্যক্রম।

বিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞানের সহকারি শিক্ষক শাহজাহান এই প্রতিবেদককে জানান, আমাদের ১১জন শিক্ষকের মধ্যে ৫ জন পরীক্ষা কেন্দ্রে তাই আমরা স্কুল বন্ধ রেখেছি। স্কুল সময়ে বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষে প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে বলেন আমি আগে পড়াতাম না, এখন ওরা কজন আমাকে বারবার বলার পর একটু দেখিয়ে দিচ্ছি, ফের কয়েকটি প্রশ্ন করার পর তিমি নিজের কথার সুর কিছুটা পাল্টে এবার বলেন আমি তো প্রাইভেট পড়াচ্চছিলাম না, গ্রুপের ক্লাস নিচ্ছিলাম, অন্য শ্রেনীর ক্লাস না নিয়ে শুধু মাত্র কেন হিসাব বিজ্ঞান ক্লাস নেয়া হচ্ছে এবং যদি ক্লাসই করানো হয়ে থাকে তবে কেন সাংবাদিক উপস্থিত হওয়ার পর তাদেরকে চলে যেতে বলা হয়েছে এমন প্রশ্ন করতেই তিনি প্রসংঙ্গ পরিবর্তন করেন এবং অফিস কক্ষে গিয়ে কথা বলার জন্য বলেন।

অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা মিলে বিদ্যালয়টির সহকারি প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলম জমাদার সবে মাত্র দুপুরের খাবার শেষ করে খাবার পাত্র গোছাচ্ছেন, তার কাছে জানতে চাইলে তিনি, কর্কশ কন্ঠে কোথা থেকে আসছেন, কে আপনারা, কেন আসছেন এমনি বিরূপ ব্যবহার করা শুরু করেন, পরিচয় দেয়ার পর ঘটনার এক পর্যায়ে এস.এস.সি পরীক্ষার কারনে শ্রেণীপাঠদান বন্ধ রাখার কোন নিয়ম বা নির্দেশনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানেন, তার নির্দেশে বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ব্যাতিত আর কিছু বলা যাবেনা।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বন্ধ থাকবে কেন আমি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের বাহিরে আছি । আমি এসে আপনাকে জানাব। এভাবে বন্ধ রাখার কোন নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান,পাঠদান ব্যাহত কিংবা বন্ধ রাখার বিধান নেই। কি কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে আগামীকাল যদিও বন্ধেরদিন আমি স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিব এবং আপনাদের জানাব, পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানানোর কথা থাকলেও এর পর বিদ্যালটির প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে আর কিছুই জানাননি ।

এবিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়ার জন্য স্কুল বন্ধ রাখতে হবে এমন অবস্থা ফরিদগঞ্জের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই। আমাদের প্রতিটি স্কুলেই পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলী রেজা আশ্রাফীর কাছে এস.এস.সি পরীক্ষার কারনে নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান বন্ধ রাখার কোন নির্দেশনা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ রাখবে কেন? ৫২জন পরীক্ষার্থীর জন্য সে বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ৩ জন শিক্ষক দায়িত্বে থাকার কথা ৫ জন দায়িত্ব পেলো কিভাবে? বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমুন নেছা বলেন, যেখানে পরীক্ষা কেন্দ্র নেই, সেই স্কুলে শ্রেণী পাঠদান বন্ধ রাখার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফরিদগঞ্জে এস.এস.সি পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান বন্ধ

আপডেট সময় : ০১:২৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফরিদগঞ্জে এস.এস.সি পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান বন্ধ

স্কুল সময়ে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক পড়াচ্ছেন প্রাইভেট

শামীম হাসান : বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এস.এস.সি পরীক্ষার কেন্দ্রের দায়িত্বে তাই নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ। এমনি অহেতুক কারণ দেখিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১১ নং চরদুখিয়ার সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ রেখেছেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। বর্তমান সময়ে দুই দিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকার পরও এমন অযাচিত কারন দেখিয়ে শ্রেণী পাঠদান বন্ধ রাখায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। যেখানে উপজেলা সদরের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে এস.এস.সি পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে শ্রেণী পাঠদান চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত তার বিপরীতে পরীক্ষা কেন্দ্র না হওয়া সত্ত্বেও এমন অনিয়ম কার্যক্রম করছে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। একই সময়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে দেখে যায় ওই বিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক শাহজাহান ৫/৭ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রাইভেট পড়ানো অবস্থায় সাংবাদিকরা স্কুলে প্রবেশের বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত শিক্ষার্থীদের স্কুল ত্যাগ করার কথা বলেন।

২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে এমনি ভিন্ন চিত্র, সেখানে বন্ধ রাখা হয়েছে নিয়মিত শ্রেণীশিক্ষা কার্যক্রম।

বিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞানের সহকারি শিক্ষক শাহজাহান এই প্রতিবেদককে জানান, আমাদের ১১জন শিক্ষকের মধ্যে ৫ জন পরীক্ষা কেন্দ্রে তাই আমরা স্কুল বন্ধ রেখেছি। স্কুল সময়ে বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষে প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে বলেন আমি আগে পড়াতাম না, এখন ওরা কজন আমাকে বারবার বলার পর একটু দেখিয়ে দিচ্ছি, ফের কয়েকটি প্রশ্ন করার পর তিমি নিজের কথার সুর কিছুটা পাল্টে এবার বলেন আমি তো প্রাইভেট পড়াচ্চছিলাম না, গ্রুপের ক্লাস নিচ্ছিলাম, অন্য শ্রেনীর ক্লাস না নিয়ে শুধু মাত্র কেন হিসাব বিজ্ঞান ক্লাস নেয়া হচ্ছে এবং যদি ক্লাসই করানো হয়ে থাকে তবে কেন সাংবাদিক উপস্থিত হওয়ার পর তাদেরকে চলে যেতে বলা হয়েছে এমন প্রশ্ন করতেই তিনি প্রসংঙ্গ পরিবর্তন করেন এবং অফিস কক্ষে গিয়ে কথা বলার জন্য বলেন।

অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা মিলে বিদ্যালয়টির সহকারি প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলম জমাদার সবে মাত্র দুপুরের খাবার শেষ করে খাবার পাত্র গোছাচ্ছেন, তার কাছে জানতে চাইলে তিনি, কর্কশ কন্ঠে কোথা থেকে আসছেন, কে আপনারা, কেন আসছেন এমনি বিরূপ ব্যবহার করা শুরু করেন, পরিচয় দেয়ার পর ঘটনার এক পর্যায়ে এস.এস.সি পরীক্ষার কারনে শ্রেণীপাঠদান বন্ধ রাখার কোন নিয়ম বা নির্দেশনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানেন, তার নির্দেশে বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ব্যাতিত আর কিছু বলা যাবেনা।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বন্ধ থাকবে কেন আমি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের বাহিরে আছি । আমি এসে আপনাকে জানাব। এভাবে বন্ধ রাখার কোন নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান,পাঠদান ব্যাহত কিংবা বন্ধ রাখার বিধান নেই। কি কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে আগামীকাল যদিও বন্ধেরদিন আমি স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিব এবং আপনাদের জানাব, পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানানোর কথা থাকলেও এর পর বিদ্যালটির প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে আর কিছুই জানাননি ।

এবিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়ার জন্য স্কুল বন্ধ রাখতে হবে এমন অবস্থা ফরিদগঞ্জের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই। আমাদের প্রতিটি স্কুলেই পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলী রেজা আশ্রাফীর কাছে এস.এস.সি পরীক্ষার কারনে নিয়মিত শ্রেণী পাঠদান বন্ধ রাখার কোন নির্দেশনা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ রাখবে কেন? ৫২জন পরীক্ষার্থীর জন্য সে বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ৩ জন শিক্ষক দায়িত্বে থাকার কথা ৫ জন দায়িত্ব পেলো কিভাবে? বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমুন নেছা বলেন, যেখানে পরীক্ষা কেন্দ্র নেই, সেই স্কুলে শ্রেণী পাঠদান বন্ধ রাখার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।