ফরিদগঞ্জ ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়ায় নারীদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধকরণ অনুষ্ঠান থানায় মামলা করতে এসে মন্দিরে চুরি ।। ১০ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের হাতে আটক ফরিদগঞ্জে স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের সাথে মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারীর মতবিনিময় ফরিদগঞ্জে সড়কের উপরে হেলে পড়া গাছে যান চলাচলে বিঘ্ন ফরিদগঞ্জ পৌর সড়ক উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করলেন পৌর মেয়র ফরিদগঞ্জে পাইকপাড়া ইউ.জি উবি’য়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে চুরি ফরিদগঞ্জে ‘স্বপ্নছায়া সামাজিক সংগঠনে’র শীতবস্ত্র ও নগদ অর্থ বিতরণ ফরিদগঞ্জে বিএনপি নেতাদের নিঃশর্তে মুক্তির দাবী ও অবরোধ সমর্থনে অবস্থান কর্মসূচি ফরিদগঞ্জ এ.আর পাইলট মডেল সরকারি উবি’র ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ভর্তির লটারি সম্পন্ন পুলিশ কর্মকর্তার হেয়ালিপনায় নির্দোষ আরিফ হলেন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী

ঈদের বাজারে পোশাকের দামে আগুন

শামীম হাসান
  • আপডেট সময় : ০৫:১৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩ ২৪৫ বার পড়া হয়েছে

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের দোকানগুলোতে শুরু হয়েছে ঈদের পোশাকের বেচা-বিক্রি। তবে ক্রেতাদের জন্য খারাপ খবর হলো এবছর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে ঈদের পোশাকে অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অধিক মূল্য খরচ করতে হবে।

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ বাজার, রূপসা বাজার, গৃদকালিন্দিয়া বাজার, নয়াহাট বাজার, কালির বাজার, পাটওয়ারী বাজারসহ উপজেলা সকল বাজারগুলোতেই কাপড়ের দোকানে ঘুরে একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। অন্য সময়ের চাইতে চওড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ঈদের পোশাক।

এবিষয়ে জানতে প্রথম রমজান থেকে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার পাইকারি মার্কেটগুলো থেকে পন্য পাইকারী ক্রয় করতে গেল সেখানে তাদের প্রতিটি পণ্য অন্যান্য বছরের তুলনায় এক থেকে দেড়শ টাকা বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে, বিভিন্ন, ব্যান্ড ও পোশাকের মান বিবেচনায় কোন কোন পোশাকে পাইকারি মূল্যই বেড়ে হাজার বারোশ টাকা। দোকানীরা জানান, কোন মাল আমরা ১০ টাকা কমে কিনতে পারলে ১০ টাকা কমে বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু মূল জায়গাতেই তো দাম বেড়েছে। আমরা বেশি টাকায় পন্য কিনে কম দামে বিক্রি করা তো সম্ভব না। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় অনেক দোকানে আসা ক্রেতার পোশাক দেখে দরদামে মিল না হওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন। ক্রেতাদের দাবি কোন পন্য পঞ্চাশ একশ টাকা বেশি হলে তবুও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে কিন্তু পাঁচশ টাকার পোশাক যদি সাতশত টাকা চাওয়া হয় তখন আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়।

ফরিদগঞ্জ সহ আশেপাশে বাজার গুলোতে প্রথম রমজান থেকে ঘুরে ক্রেতাদের সাথে বলে জানা যায়, পূর্বে যেসকল থ্রি-পিস বিক্রি হতো ৫০০ টাকা একই থ্রি-পিস এখন আমাদের কিনতে হচ্ছে সাতশ টাকায়। মান বেধে সাতশ টাকার থ্রি-পিস নয়শ টাকা এক হাজার টাকার থ্রি-পিস বারোশ টাকা এবং বারোশ টাকার থ্রি-পিস কিনতে হচ্ছে পনেরোশ টাকা থেকে ষোলোশ টাকায়। পুরুষদের পোশাকেও একই দৃশ্য গত বছর যে শার্টগুলো বিক্রি হতো তিনশ পঞ্চাশ টাকা থেকে চারশ টাকা এবছর সেগুলো কিনতে হচ্ছে ছয়শ টাকায়। কিছুটা ভালো মানের শার্ট কিনতে যেখানে খরচ করতে হতো পাঁচ-ছয়শ টাকা সেখানেই শার্ট কিনতে খরচ করতে হচ্ছে আটশ পঞ্চাশ থেকে নয়তশ টাকা। পাঁচশত টাকার পাঞ্জাবী ছয়শ থেকে সাতশ টাকা এবং সাতশ পঞ্চাশ টাকার পাঞ্জাবী বিক্রি হচ্ছে নয়শত টাকায়। চারশ পঞ্চাশ টাকার লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ছয়শ টাকায়। বাচ্ছাদের পোশাকেও একই দৃশ্য দুইশত পঞ্চাশ টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে তিনশত পঞ্চাশ টাকারও বেশি বয়স ও মান বেধে ছয়শ টাকার পোশাক সাতশত পঞ্চাশ এবং বারোশ টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে পনেরোশ টাকায়। ভিন্ন বয়সের মানুষের জুতাতেও তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে দাম। পূর্বের দামের চেয়ে প্রতিটি জুতায় এক থেকে তিনশ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ বাজারের জাকিয়া বস্ত্র বিতানের পরিচালক জাকির পাটওয়ারী শুভ এই সংবাদ কর্মীকে জানান, আমরা যেখান থেকে মাল পাইকারি করি সেখানেই প্রতিটি পন্যের দাম বেড়েছে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা এ কারনেই অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রতিটি পন্য কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। মোকামে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদেরকে পন্যের ক্রয়মূল্য অনুপাতে বিক্রি করতে হবে।

দুই মেয়ের জন্য থ্রি-পিস কিনতে আসা সাবিনা আক্তার এই প্রতিবেদককে জানান, সেলাই করার জন্য মেয়েদের পোশাক রমজানের শুরুতেই কিনতে হয়। এবছর থ্রি-পিস কিনতে এসে দোকানদাররা অনেক বেশি দাম চাচ্ছে, কয়েক দোকানে ঘুরে দেখেছি দোকানদাররা অধিক মূল্য চাওয়ার কারনে এখনো কিনি নি। পোশাকের দাম এক-দেড়শ দুইশ টাকা বেশি হলেও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে আঠারোশ-দুই হাজার টাকার থ্রি-পিস দোকানদার চাচ্ছে পঁচিশ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা। পোশাকের দাম এমন দরমূল্য হলে তো আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে না।

এবিষয়ে বাজারের নিত্য পন্যের দাম স্মৃতিশীল রাখতে গত ২৮ মার্চ বুধবার ভোক্তা অধিকার চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুর হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল ফরিদগঞ্জ বাজারে তদারকি ও অভিজান পরিচালনা করেন, ভোক্তা অধিকারের প্রতিনিধি দলটি এসময় বিভিন্ন কাপড়ের দোকানে ঘুরে ত্রিশ শতাংশের বেশি লাভে পন্য বিক্রি না করার জন্য বলেন এবং অতিরিক্ত লাভে পন্য বিক্রির সুনির্দষ্ট অভিযোগ পেলে নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা করা হবে দোকানদারের অবগত করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঈদের বাজারে পোশাকের দামে আগুন

আপডেট সময় : ০৫:১৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের দোকানগুলোতে শুরু হয়েছে ঈদের পোশাকের বেচা-বিক্রি। তবে ক্রেতাদের জন্য খারাপ খবর হলো এবছর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে ঈদের পোশাকে অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অধিক মূল্য খরচ করতে হবে।

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ বাজার, রূপসা বাজার, গৃদকালিন্দিয়া বাজার, নয়াহাট বাজার, কালির বাজার, পাটওয়ারী বাজারসহ উপজেলা সকল বাজারগুলোতেই কাপড়ের দোকানে ঘুরে একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। অন্য সময়ের চাইতে চওড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ঈদের পোশাক।

এবিষয়ে জানতে প্রথম রমজান থেকে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার পাইকারি মার্কেটগুলো থেকে পন্য পাইকারী ক্রয় করতে গেল সেখানে তাদের প্রতিটি পণ্য অন্যান্য বছরের তুলনায় এক থেকে দেড়শ টাকা বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে, বিভিন্ন, ব্যান্ড ও পোশাকের মান বিবেচনায় কোন কোন পোশাকে পাইকারি মূল্যই বেড়ে হাজার বারোশ টাকা। দোকানীরা জানান, কোন মাল আমরা ১০ টাকা কমে কিনতে পারলে ১০ টাকা কমে বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু মূল জায়গাতেই তো দাম বেড়েছে। আমরা বেশি টাকায় পন্য কিনে কম দামে বিক্রি করা তো সম্ভব না। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় অনেক দোকানে আসা ক্রেতার পোশাক দেখে দরদামে মিল না হওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন। ক্রেতাদের দাবি কোন পন্য পঞ্চাশ একশ টাকা বেশি হলে তবুও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে কিন্তু পাঁচশ টাকার পোশাক যদি সাতশত টাকা চাওয়া হয় তখন আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়।

ফরিদগঞ্জ সহ আশেপাশে বাজার গুলোতে প্রথম রমজান থেকে ঘুরে ক্রেতাদের সাথে বলে জানা যায়, পূর্বে যেসকল থ্রি-পিস বিক্রি হতো ৫০০ টাকা একই থ্রি-পিস এখন আমাদের কিনতে হচ্ছে সাতশ টাকায়। মান বেধে সাতশ টাকার থ্রি-পিস নয়শ টাকা এক হাজার টাকার থ্রি-পিস বারোশ টাকা এবং বারোশ টাকার থ্রি-পিস কিনতে হচ্ছে পনেরোশ টাকা থেকে ষোলোশ টাকায়। পুরুষদের পোশাকেও একই দৃশ্য গত বছর যে শার্টগুলো বিক্রি হতো তিনশ পঞ্চাশ টাকা থেকে চারশ টাকা এবছর সেগুলো কিনতে হচ্ছে ছয়শ টাকায়। কিছুটা ভালো মানের শার্ট কিনতে যেখানে খরচ করতে হতো পাঁচ-ছয়শ টাকা সেখানেই শার্ট কিনতে খরচ করতে হচ্ছে আটশ পঞ্চাশ থেকে নয়তশ টাকা। পাঁচশত টাকার পাঞ্জাবী ছয়শ থেকে সাতশ টাকা এবং সাতশ পঞ্চাশ টাকার পাঞ্জাবী বিক্রি হচ্ছে নয়শত টাকায়। চারশ পঞ্চাশ টাকার লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ছয়শ টাকায়। বাচ্ছাদের পোশাকেও একই দৃশ্য দুইশত পঞ্চাশ টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে তিনশত পঞ্চাশ টাকারও বেশি বয়স ও মান বেধে ছয়শ টাকার পোশাক সাতশত পঞ্চাশ এবং বারোশ টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে পনেরোশ টাকায়। ভিন্ন বয়সের মানুষের জুতাতেও তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে দাম। পূর্বের দামের চেয়ে প্রতিটি জুতায় এক থেকে তিনশ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ বাজারের জাকিয়া বস্ত্র বিতানের পরিচালক জাকির পাটওয়ারী শুভ এই সংবাদ কর্মীকে জানান, আমরা যেখান থেকে মাল পাইকারি করি সেখানেই প্রতিটি পন্যের দাম বেড়েছে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা এ কারনেই অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রতিটি পন্য কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। মোকামে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদেরকে পন্যের ক্রয়মূল্য অনুপাতে বিক্রি করতে হবে।

দুই মেয়ের জন্য থ্রি-পিস কিনতে আসা সাবিনা আক্তার এই প্রতিবেদককে জানান, সেলাই করার জন্য মেয়েদের পোশাক রমজানের শুরুতেই কিনতে হয়। এবছর থ্রি-পিস কিনতে এসে দোকানদাররা অনেক বেশি দাম চাচ্ছে, কয়েক দোকানে ঘুরে দেখেছি দোকানদাররা অধিক মূল্য চাওয়ার কারনে এখনো কিনি নি। পোশাকের দাম এক-দেড়শ দুইশ টাকা বেশি হলেও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে আঠারোশ-দুই হাজার টাকার থ্রি-পিস দোকানদার চাচ্ছে পঁচিশ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা। পোশাকের দাম এমন দরমূল্য হলে তো আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে না।

এবিষয়ে বাজারের নিত্য পন্যের দাম স্মৃতিশীল রাখতে গত ২৮ মার্চ বুধবার ভোক্তা অধিকার চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুর হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল ফরিদগঞ্জ বাজারে তদারকি ও অভিজান পরিচালনা করেন, ভোক্তা অধিকারের প্রতিনিধি দলটি এসময় বিভিন্ন কাপড়ের দোকানে ঘুরে ত্রিশ শতাংশের বেশি লাভে পন্য বিক্রি না করার জন্য বলেন এবং অতিরিক্ত লাভে পন্য বিক্রির সুনির্দষ্ট অভিযোগ পেলে নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা করা হবে দোকানদারের অবগত করেন।