ফরিদগঞ্জ ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে হনুফা খাতুনের মৃত্যুতে শোকের মাতম, দাফন সম্পন্ন ফরিদগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লায়ন আল-আমিনের লিফলেট বিতরণ ফরিদগঞ্জ কে আর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ ফরিদগঞ্জে যুবদলের দ্বি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন ফরিদগঞ্জে সড়কের কাজে ধীরগতি ।। জনদুর্ভোগ চরমে ফরিদগঞ্জে ‘প্রত্যাশা স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা’র মেধাবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ফরিদগঞ্জে পাইকপাড়া গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন ফরিদগঞ্জে পূর্ব বড়ালী ডে-নাইট মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ‘ফরিদগঞ্জ স্পোর্টস ক্লাব’ ফরিদগঞ্জে পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি’র শীতের উপহার সামগ্রী বিতরণ ফরিদগঞ্জে জেলা প্রশাসনের কম্বল বিতরণ

১০ টাকার পোশাকে গরিবের শীত বিলাস

শামীম হাসান
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে

 

প্রকৃতিতে বিরাজ করছে শীতের আবহ। সারাদেশের ন্যায় ফরিদগঞ্জেও জেঁকে বসেছে শীত। তীব্র এই শীত নিবারণের জন্যে সকল শ্রেণী পেশা ও ভিন্ন বয়সী মানুষদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু শীতের পোশাক। উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যরা বড় বড় শপিং মল থেকে উচ্চমূল্যে পোশাক ক্রয় করলেও মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যদের শীত নিবারণে শীতের পোশাক ক্রয়ের জন্য প্রত্যাশার জায়গা হয়ে উঠেছে ফুটপাতের ১০ টাকা থেকে শুরু করে শত টাকায় শীতের পোশাকের দিকে। সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় শীতের শুরু থেকে এসব ফুটপাত থেকে পোশাক কিনতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতারা। পোশাকের স্তূপের শত শত পোশাকের মাঝ থেকে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর পোশাকটি খুঁজে বের করার অহরহ দৃশ্যের দেখা মেলে শীত উপলক্ষে গড়ে ওঠা ভাসমান এসব ফুটপাতের দোকানে। ১০ টাকা থেকে শত টাকায় ক্রেতারা কিনছেন তাদের প্রত্যাশিত এসব শীতের পোশাক। ভ্রাম্যমাণভাবে গড়ে ওঠা এসব দোকান শুধু উপজেলা সদরস্থ ফরিদগঞ্জ বাজারেই নয়, উপজেলার অন্যান্য বাজারগুলোতেও একইভাবে দেখা মিলে মৌসুমি শীতের পোশাক বিক্রির এসব দোকান। সে সব দোকানেও একইভাবে বেচা-বিক্রি চলে সমানভাবে। উপজেলা সদরস্থ ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যতীত গৃদকালিন্দিয়া বাজার, রূপসা বাজার এবং গাজীপুর বাজারেও দেখা মিলে শীতের পোশাক বিক্রির এসব দোকানের। ফরিদগঞ্জ বাজারের সড়কের দুপাশে এবং ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এমন দোকানের দেখা মিলে প্রায় বিশটির বেশি।

কথা হয় কয়েকজন বিক্রেতার সাথে। তারা জানান, বছরের অন্য সময় ভিন্ন কাজ করলেও শীতকে উপলক্ষ করে ৩ থেকে ৪ মাস চলে তাদের এই মৌসুমী ব্যবসা। পূর্বে ব্যবহৃত এসব পোশাক বড় বড় লট কিনে ইনপোটাররা এগুলোকে ওয়াশ করে তারপর পোশাকের কোয়ালিটি অনুযায়ী ভাগ করে কয়েক ভাগে। ঢাকার সে সব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আমরা গড়ে পিস হিসেবে কিনে এনে কোয়ালিটি অনুযায়ী আরেক দফায় এগুলো বাছাই করি। পোশাকের মান অনুযায়ী কয়েকটি স্তূপ দেয়া হয় এসব পোশাক। যার কোনো কোনো স্তূপের পোশাক ১০ টাকা, কোনটি ২০টাকা, আবার কোনটি ৩০ টাকা। এভাবে মান অনুযায়ী যে পোশাকটির কোয়ালিটি ভালো মানের সেগুলোর দাম শত টাকার বেশিও হয়। স্তূপকৃত এসব পোশাকই সামর্থ্য ও চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতারা কিনে নেন। নারী-পুরুষ সকল বয়সীর পোশাকই পাওয়া যায় এসব দোকানে। যে কারণে শুধু নিম্নবিত্তরাই নয়, অনেক মধ্যবিত্তরাও এখান থেকে কিনছেন পোশাক।কথা হয় শীতের পোশাক কিনতে আসা রিকশা চালক আব্দুল এরশাদের সাথে। তিনি জানান, হাজার টাকায় শীতের জামা কেনার সামর্থ্য তো আমাদের নাই। তাই গত বেশ কয়েক বছর শীতে এখান থেকেই শীতের জামা কিনি। এ বছর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং ছেলের জন্য আগেই নিয়েছি। আজকে নিজের জন্য কিনতে আসছি। হাতে থাকা পোশাক কত দিয়ে কিনলেন? এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন ত্রিশ টাকা। ১০ টাকার পোশাকও তো আছে সেখান থেকে নেননি কেন? বলতেই তিনি ফের বলেন, ১০/২০/৩০ আরও বেশি টাকার সুয়েটারও আছে এখানে। যেটা জিনিস ভালো ওইটার দামও একটু বেশি। কথা হয় অপর ক্রেতা সারমিন আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, দেখে শুনে একটু খুঁজে নিতে পারলে কম টাকায় এখানে মোটামুটি ভালোমানের পোশাকই পাওয়া যায়। তাই এখানে কিনতে আসি। আমি আগেও নিয়েছি আজকেও নিতে আসছি। এ সময় পোশাক কিনতে আসা বৃদ্ধ বয়সী করিম মিয়ার দেখা মিলে। কী কিনতে আসছেন? বলতেই তিনি বলে ওঠেন, বাবারে এই শীতের ভিত্তে মাইনষে দিলে এক্কান কম্বল দেয়, কিন্তু ওগ্গা জাম্পার কেউ দেয় না। হঞ্চাশ টিয়া লই আইছি জাম্পার কিনোনেরলাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

১০ টাকার পোশাকে গরিবের শীত বিলাস

আপডেট সময় : ০৫:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

 

প্রকৃতিতে বিরাজ করছে শীতের আবহ। সারাদেশের ন্যায় ফরিদগঞ্জেও জেঁকে বসেছে শীত। তীব্র এই শীত নিবারণের জন্যে সকল শ্রেণী পেশা ও ভিন্ন বয়সী মানুষদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু শীতের পোশাক। উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যরা বড় বড় শপিং মল থেকে উচ্চমূল্যে পোশাক ক্রয় করলেও মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যদের শীত নিবারণে শীতের পোশাক ক্রয়ের জন্য প্রত্যাশার জায়গা হয়ে উঠেছে ফুটপাতের ১০ টাকা থেকে শুরু করে শত টাকায় শীতের পোশাকের দিকে। সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় শীতের শুরু থেকে এসব ফুটপাত থেকে পোশাক কিনতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতারা। পোশাকের স্তূপের শত শত পোশাকের মাঝ থেকে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর পোশাকটি খুঁজে বের করার অহরহ দৃশ্যের দেখা মেলে শীত উপলক্ষে গড়ে ওঠা ভাসমান এসব ফুটপাতের দোকানে। ১০ টাকা থেকে শত টাকায় ক্রেতারা কিনছেন তাদের প্রত্যাশিত এসব শীতের পোশাক। ভ্রাম্যমাণভাবে গড়ে ওঠা এসব দোকান শুধু উপজেলা সদরস্থ ফরিদগঞ্জ বাজারেই নয়, উপজেলার অন্যান্য বাজারগুলোতেও একইভাবে দেখা মিলে মৌসুমি শীতের পোশাক বিক্রির এসব দোকান। সে সব দোকানেও একইভাবে বেচা-বিক্রি চলে সমানভাবে। উপজেলা সদরস্থ ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যতীত গৃদকালিন্দিয়া বাজার, রূপসা বাজার এবং গাজীপুর বাজারেও দেখা মিলে শীতের পোশাক বিক্রির এসব দোকানের। ফরিদগঞ্জ বাজারের সড়কের দুপাশে এবং ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এমন দোকানের দেখা মিলে প্রায় বিশটির বেশি।

কথা হয় কয়েকজন বিক্রেতার সাথে। তারা জানান, বছরের অন্য সময় ভিন্ন কাজ করলেও শীতকে উপলক্ষ করে ৩ থেকে ৪ মাস চলে তাদের এই মৌসুমী ব্যবসা। পূর্বে ব্যবহৃত এসব পোশাক বড় বড় লট কিনে ইনপোটাররা এগুলোকে ওয়াশ করে তারপর পোশাকের কোয়ালিটি অনুযায়ী ভাগ করে কয়েক ভাগে। ঢাকার সে সব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আমরা গড়ে পিস হিসেবে কিনে এনে কোয়ালিটি অনুযায়ী আরেক দফায় এগুলো বাছাই করি। পোশাকের মান অনুযায়ী কয়েকটি স্তূপ দেয়া হয় এসব পোশাক। যার কোনো কোনো স্তূপের পোশাক ১০ টাকা, কোনটি ২০টাকা, আবার কোনটি ৩০ টাকা। এভাবে মান অনুযায়ী যে পোশাকটির কোয়ালিটি ভালো মানের সেগুলোর দাম শত টাকার বেশিও হয়। স্তূপকৃত এসব পোশাকই সামর্থ্য ও চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতারা কিনে নেন। নারী-পুরুষ সকল বয়সীর পোশাকই পাওয়া যায় এসব দোকানে। যে কারণে শুধু নিম্নবিত্তরাই নয়, অনেক মধ্যবিত্তরাও এখান থেকে কিনছেন পোশাক।কথা হয় শীতের পোশাক কিনতে আসা রিকশা চালক আব্দুল এরশাদের সাথে। তিনি জানান, হাজার টাকায় শীতের জামা কেনার সামর্থ্য তো আমাদের নাই। তাই গত বেশ কয়েক বছর শীতে এখান থেকেই শীতের জামা কিনি। এ বছর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং ছেলের জন্য আগেই নিয়েছি। আজকে নিজের জন্য কিনতে আসছি। হাতে থাকা পোশাক কত দিয়ে কিনলেন? এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন ত্রিশ টাকা। ১০ টাকার পোশাকও তো আছে সেখান থেকে নেননি কেন? বলতেই তিনি ফের বলেন, ১০/২০/৩০ আরও বেশি টাকার সুয়েটারও আছে এখানে। যেটা জিনিস ভালো ওইটার দামও একটু বেশি। কথা হয় অপর ক্রেতা সারমিন আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, দেখে শুনে একটু খুঁজে নিতে পারলে কম টাকায় এখানে মোটামুটি ভালোমানের পোশাকই পাওয়া যায়। তাই এখানে কিনতে আসি। আমি আগেও নিয়েছি আজকেও নিতে আসছি। এ সময় পোশাক কিনতে আসা বৃদ্ধ বয়সী করিম মিয়ার দেখা মিলে। কী কিনতে আসছেন? বলতেই তিনি বলে ওঠেন, বাবারে এই শীতের ভিত্তে মাইনষে দিলে এক্কান কম্বল দেয়, কিন্তু ওগ্গা জাম্পার কেউ দেয় না। হঞ্চাশ টিয়া লই আইছি জাম্পার কিনোনেরলাই।