রহস্যময় আগুণ নিয়ে ফরিদগঞ্জে তোলপাড়
- আপডেট সময় : ০২:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ৪৬৫ বার পড়া হয়েছে
রহস্যময় আগুণ থেকে বাঁচার জন্য ঘর জুড়ে তাবিজসহ নানা ধরনের কবিরাজী সামগ্রীতে ভরপুর। কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া দুরুদপাঠ এমনকি গরু জবাই করে খাওয়ালে এই আগুণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ওই পরিবারের সদস্যরা। কিভাবে কোথা থেকে কখন আগুণ লাগছে তা কেউই বলতে পারছে না। স্থানীয় মসজিদের ইমামও নিজের চোখে আগুণ লাগার দৃশ্য দেখেছন। গত কয়েকমাস ধরের রহস্যময় আগুণ নিয়ে আতংকে এলাকাবাসী।
ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের চন্দের বাড়ীর শাহাদাত হোসেনের বসত ঘরের ঘটনা এটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই তথ্য জেনে দুরদুরান্ত থেকে মানুষজন এসে ভিড় করছেন রহস্যময় এই আগুণের বিষয় জানতে।
জানা গেছে, ওই গ্রামের বৃদ্ধ শাহাদাত হোসেন (৭৫) এর ১টি পাকা ও ১টি টিনের তৈরি চৌচালা বসত ঘরে, বাড়ীতে প্রবেশ পথের পর্দায়, রান্না ঘরের চালে, ঘরের ফ্রিজের ভিতরের অংশে, আসবাবপত্র, জামাকাপড় এমনকি গায়ে থাকা পোশাকেও হঠাৎ আগুন লাগা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এই ঘরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র প্রতিবেশীদের ঘরে রাখা হলেও সেখানে শুধুমাত্র এঘরের জিনিসপত্রে আগুন লাগছে। মসজিদের মত পবিত্রস্থানে রাখা হলেও সেই মসজিদের অন্যান্য সকল সামগ্রী নিরাপদে থাকলেও আগুন লাগছে শুধু শাহাদাত হোসেন এর পরিবারের ব্যবহৃত জিনিস পত্রে। কোথায় এর সূত্রপাত জানে না কেউ। তবে কখনও রাতের বেলায় এমন আগুণ জ¦লতে দেখা যায়নি।
ঘরের মালিক শাহাদাত হোসেন জানান, গত ৬/৭ মাস ধরে এভাবে আগুণ জ¦লে আসছে। কে জ্বালাচ্ছে, কিভাবে জ্বালাচ্ছে আমরা কিছুই দেখছি না। তারা (অদৃশ্য কিছু) আমাদের সামনেই আগুণ জ¦ালিয়ে দিচ্ছে। আমরা সবাই বসা অবস্থায় আমাদের সামনেই আগুণ লাগছে।
প্রতিবেশি মুদি দোকানদার জাকির হোসেন বলেন, জিনের অদৃশ্য ক্ষমতায় এমন আগুণ ধরিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন বলেন, ২-৩ দিন আগে ২জন মহিলা ও ১ শিশু বাচ্চার গায়ে আগুণ লাগিয়েছে অদৃশ্য শক্তি। এগ্রামে আর কোথায়ও এমন আগুণ লাগার ঘটনা ঘটেনি শুধু এই ২ঘরেই আগুণ লাগছেই।
মনির হোসেন স্থানীয় আরেকজন বলেন, ৮মাস ধরে এমন আগুণ লেগে আসছে। প্রথমে বাচ্চার খাটে, খাতা কম্বলে, এমন আগুল লাগছেই। বহু হুজুর কবিরাজ আসলেও কোন কাজ হচ্ছে না। কিছুদিন আগে মসজিদের সামনে তাদের খাতা কম্বল সব পুড়ে গেছে। তাদের মালামাল যেখানে রাখা হয় সেখানেই আগুন লাগে।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো: লিয়াকত হোসেন বলেন, আগুণ জ¦লতে আমি নিজেও দেখেছি। তাদের ঘরের লেপ-তোষক, আসবাবপত্রে আগুণ জ¦লে। আমিও কয়েকবার আগুন নিভিয়েছি। আগুন থেকে রক্ষা পেতে তাদের বেডিংপত্র রাখা হয় মসজিদে। মসজিদে পর্যন্ত তাদের বেডিংপত্রে আগুণ লাগে। আমরা কয়েকবার কোরআন তেলোয়াত দোয়া-দুরুদ পাঠ করেছি। গরু জবাই করে এলাকাবাসীকে খাওয়ানো হয়েছে তাতেও রক্ষা হয়নি।
ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার কামরুল হাসান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আগুনের কোন সূত্রপাত খুঁজে পাইনি। এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানতে পারি, কে বা কারা আগুণ লাগিয়ে দিচ্ছে অদৃশ্যভাবে এমনকি ঘরের মুরুব্বি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও তার পোশাকে আগুন লেগে যাচ্ছে। বিষয়টি আমি আমার কর্তপক্ষকে জানিয়েছি।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহসভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা আলিম আজম রেজা বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছি। আমি ভাল করে পর্যবেক্ষণ করেছি, বিদ্যুতের কোন তারে আগুণ লাগার দৃশ্য নেই। ফলে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছি।