ফরিদগঞ্জ ০৮:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ফরিদগঞ্জে এতিম ও পথশিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ করলো পুলিশ সদস্য ফরিদগঞ্জের কালির বাজারে স্বপ্ন ছায়া সামাজিক সংগঠনের ইফতার বিতরণ ফরিদগঞ্জে পাবলিক টয়লেট নির্মাণে বাঁধার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের সংবাদ সম্মেলন ফরিদগঞ্জে হনুফা খাতুনের মৃত্যুতে শোকের মাতম, দাফন সম্পন্ন ফরিদগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লায়ন আল-আমিনের লিফলেট বিতরণ ফরিদগঞ্জ কে আর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ ফরিদগঞ্জে যুবদলের দ্বি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন ফরিদগঞ্জে সড়কের কাজে ধীরগতি ।। জনদুর্ভোগ চরমে ফরিদগঞ্জে ‘প্রত্যাশা স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা’র মেধাবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পলাতক প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা

ফরিদগঞ্জ সংবাদ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২১:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪ ৯১ বার পড়া হয়েছে

 

ফরিদগঞ্জের ‘দরবেশ বাবা’ খ্যাত ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলের পদত্যাগ চেয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও অভিভাবকগণ স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগ করতে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে প্রধান শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষক স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নেতাকে ম্যানেজ করে গত ২৫ আগস্ট রোববার সকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে তার বড়োভাইকে নিয়ে ১৫ মিনিটের জন্যে স্কুলে আসেন এবং নিজ অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি, নিজের ব্যক্তিগতসকল অপকর্মের নথি নিয়ে তড়িঘড়ি করে স্কুল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি সর্বত্র জানাজানি হলে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বৈষম্যবিরোধী স্কুলে জড়ো হতে থাকেন ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও সচেতন অভিভাবকবৃন্দ। প্রধান শিক্ষক যেন স্কুল থেকে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথি সরাতে না পারেন তাই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার কক্ষের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোঃ আশিক ইসলাম। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্কুলটির বিতর্কিত প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ সরাসরি দেয়ার কথা রয়েছে আজ বুধবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফরিদগঞ্জ এআর প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক মোঃ মজিবুর রহমান।

স্মরকলিপিতে প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরা হয়। ছাত্ররা দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন শিক্ষাজীবনে দুটি তৃতীয় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে সনদপত্র জালিয়াতি করে দ্বিতীয় বিভাগে চাকরি নিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি পদধারী এই পলিটিশিয়ান ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিধি বহির্ভূতভাবে এডহক কমিটির মাধ্যমে চাকরিতে যোগদান করেন। শুধু এই প্রতিষ্ঠানই নয়, তিনি চাকরি জীবনে প্রথম প্রধান শিক্ষকও হয়েছেন বিধিবহির্ভূত ভাবে। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১২ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়াই তিনি তথ্য গোপন করে হয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক।

রফিকুল আমিন কাজলের বাবা একজন অমুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও নিজের বাবাকে একাত্তরের সংগ্রাম কমিটির সদস্য দাবি করে ভুয়া মুক্তযোদ্ধা সনদ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিসহ নিয়েছেন বিশেষ সুবিধা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিপত্র অনুযায়ী শিক্ষাজীবনে কোনো তৃতীয় বিভাগ থাকলে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচন ক্যাটাগরিতে আবেদন করা যায় না। অথচ প্রধান শিক্ষকের এসএসসি ও এইচএসসিতে দুটি তৃতীয় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে তৃতীয় বিভাগকে দ্বিতীয় বিভাগে রূপান্তর করে নকল সার্টিফিকেট ও নিজের বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেখিয়ে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে দুই বার হয়ছেন উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক। যা সুস্পষ্ট দুর্নীতির সামিল।

ছাত্ররা দাবি করেন, ১৯৯৫ সালের জনবল কাঠামো পরিপত্র অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক পদে থেকে কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকার বিধান না থাকলেও রফিকুল আমিন স্কুলে বসেই চালিয়ে যাচ্ছেন তার ‘বনফুল’ নামক গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা। স্কুল গেটে তার পৃথক একটি গ্যার্স সিলিন্ডারের দোকানও রয়েছে। তার অফিস কক্ষে গ্যাস সিলিন্ডারের বিক্রয় প্রতিনিধিগণ নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন এবং স্কুল ফান্ডের টাকা ব্যক্তিগত গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ের কাজে ইনভেস্ট করেছেন বলে অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা।স্মরকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের সাথে জালিয়াতি করে ‘ব্যবসায়ী’ পরিচয়ে বর্তমান প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সমমানের একাধিক মাধ্যমিক স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও হয়েছেন তিনি। এ আর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া হাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হন এবং নিজের সভাপতিত্বে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনে নিয়োগ দিয়েছেন গৃদকালিন্দিয়া হাই স্কুলের নতুন প্রধান শিক্ষক, যা শিক্ষা বিভাগের সাথে সুস্পষ্ট প্রতরণা। উপজেলার মনতলা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়েও করেছেন নানাবিধ অনিয়ম।

নিজে আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় উপজেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজিয়া সুলতানাকে স্কুলে শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক হিসেবে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নারী নেত্রী রাজিয়া সুলতানা স্কুলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন যুব মহিলা লীগের সভাপতি হিসেবে। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে খার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।

স্কুলসূত্রে জানা যায়, যুব মহিলা লীগের নেত্রী হওয়ায় প্রধান শিক্ষক প্রোটোকল ডিঙ্গিয়ে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষকদের উপরে স্থান দিয়ে রাজিয়া সুলতানাকে বানিয়েছিলেন সিনিয়র শিক্ষক। শিক্ষক হাজিরা খাতায় সুলতানা রাজিয়ার নাম ছিলো শিক্ষকদের সারির সবার উপরে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে তার প্রতিবাদ করার সাহস পাননি কোনো সিনিয়র শিক্ষক। সিনিয়র হয়েও দিনের পর দিন সুলতানা রাজিয়ার মত একজন জুনিয়র শিক্ষকের কাছে অপমানিত হয়েছেন অনেকে। প্রধান শিক্ষক

রফিকুল আমিন কাজল স্কুলে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম সোহাগকে। সোহাগ কোনো ক্লাসে অংশ না নিলেও প্রতি মাসে তাকে নিয়ম করে বেতন দেয়া হতো স্কুল ফান্ড থেকে। প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রলীগ সভাপতি দুজন মিলে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগে যোগ দিতে ও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে যেতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে।

দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্য থাকায় স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ঢিলেঢালা ভাবে। নেতৃত্বহীন উপজেলার মডেল স্কুলটির এমন বেহাল দশা দেখে স্বয়ং অভিভাবকরাই প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন। সকলেরই দাবি, বিতর্কিত প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করে যোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষকের আসনে বসানো হোক। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা আশিকুল ইসলাম জানান, আমরা স্কুলের শিক্ষকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি উপজেলা বিএনপির কিছু পাতি নেতাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক স্কুলে ঢুকেছেন। উপজেলা বিএনপির নামধারী ঐ নেতারা স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের বলেছেন, প্রধান শিক্ষককে ভুলে আসতে কোনো শিক্ষক বাধা দিলে তার পা কেটে দেয়া হবে। তাই সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের পা কাটার দুঃসাহস যেই নেতারা দেখিয়েছেন তাদের প্রতিহত করতে এবং আওয়ামী লীগের দালাল অযোগ্য, অবৈধ প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে ছাত্র সমাজ ও অভিভাবকগণ মিলে আমরা স্কুলে যাই। প্রধান শিক্ষক যেন চোরের মত স্কুলে এসে স্কুলের আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব করতে না পারেন সেজন্যে আমরা তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত আসলে নতুন প্রধান শিক্ষককে স্বাগত জানিয়ে তালা খুলে দেয়া হবে।

অভিভাবকদের মধ্য থেকে স্কুলের সর্বশেষ নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটিরর সদস্য মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, আমি গত ৫ বছর ধরে একক ভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। যিনি নিয়োগের সময় লিখিত পরীক্ষায় মাত্র ০৩ (তিন) নম্বর পান, তিনি কী করে উপজেলা সদরস্থ একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক হন, তা আমার বোধগম্য হয়নি। তখনই আমি তার বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য বের করতে শুরু করি এবং ক্রমান্বয়ে জানতে পারি তার চাকরি জীবনের সকল নিয়োগ অবৈধ। তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি ডাবল থার্ড ক্লাস পাওয়া প্রধান শিক্ষক। স্কুলের টাকায় তার ব্যক্তিগত গ্যাসের ব্যবসা চলে। তার অযোগ্যতার কারণে মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছে না স্কুলের সাধারণ শিক্ষকগণ। নিজে একটি প্রতিষ্ঠানের অযোগ্য প্রধান শিক্ষক হয়েও মন্ত্রণালয়কে ভুল তথ্য দিয়ে আরও দুটি মাধ্যমিক স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন। এমন বাটপারি করতে পেরেছেন কেবল আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পেরেছেন বলেই। অযোগ্য প্রধান শিক্ষককে না অপসারণ করতে পারলে আমাদের সন্তানরাও অযোগ্য মানুষ হয়েই গড়ে উঠবে। রফিকুল আমিন কাজলের অযোগ্যতা নিয়ে মুখ খুলেছে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। ২০১৯ সালের এসএসসি ব্যাচের পরীক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন জানান, হেড স্যার গণিত ক্লাসে এসে অংক মেলাতে পারেন না। যখন বোর্ডে কোনো অংক মিলে না, তখনই তার জরুরি ফোন এসেছে বলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতেন। অসংখ্য দিন তিনি অসমাপ্ত অংক বোর্ডে রেখে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেছেন। * ২০২০ সালের এসএসসি ব্যাচের পরীক্ষার্থী জাকির হোসেন একই সুরে

বলেন, স্যার যখনই অংক করাতে গিয়ে আটকে যান, তখনই আমরা বুঝে নিতাম, এখনই স্যারের মোবাইলে কল চলে আসবে। ঠিক তেমনটাই হতো। ফোনে কল না আসলেও মোবাইল কানে দিয়ে কথা বলার অভিনয় করে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। ঘণ্টা পড়লে অংকটা বাসায় করে নিও বলে চলে যেতেন।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুলে অনেক ভালো গণিত শিক্ষক থাকলেও তাঁদের ক্লাস না দিয়ে দিনের পর দিন তিনিই গণিত ক্লাস নিয়ে গেছেন। অংক ক্লাসে এসে তার ব্যক্তি জীবনের ইতিহাস বলেও বহু ক্লাস নষ্ট করেছেন। তিনি সরকারি দলের পাওয়ারফুল লোক বলে আমরা তখন তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারিনি। আমরা চাই একজন ভালো, মেধাবী ও যোগ্য প্রধান শিক্ষক আমাদের স্কুলে আসুক।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন অনুপস্থিত তা আমার জানা ছিলো না। যদি তেমনটি হয় তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যস্থাগ্রহণ করে বিকল্প কাউকে দায়িত্ব দেয়া হবে। প্রধান শিক্ষকের অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের বিষয়ে জেলা প্রশাসক জানান, এ বিষয়ে প্রমাণ সাপেক্ষ অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পলাতক প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা

আপডেট সময় : ০৫:২১:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

 

ফরিদগঞ্জের ‘দরবেশ বাবা’ খ্যাত ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলের পদত্যাগ চেয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও অভিভাবকগণ স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগ করতে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে প্রধান শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষক স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নেতাকে ম্যানেজ করে গত ২৫ আগস্ট রোববার সকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে তার বড়োভাইকে নিয়ে ১৫ মিনিটের জন্যে স্কুলে আসেন এবং নিজ অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি, নিজের ব্যক্তিগতসকল অপকর্মের নথি নিয়ে তড়িঘড়ি করে স্কুল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি সর্বত্র জানাজানি হলে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বৈষম্যবিরোধী স্কুলে জড়ো হতে থাকেন ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও সচেতন অভিভাবকবৃন্দ। প্রধান শিক্ষক যেন স্কুল থেকে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথি সরাতে না পারেন তাই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার কক্ষের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোঃ আশিক ইসলাম। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্কুলটির বিতর্কিত প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ সরাসরি দেয়ার কথা রয়েছে আজ বুধবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফরিদগঞ্জ এআর প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক মোঃ মজিবুর রহমান।

স্মরকলিপিতে প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরা হয়। ছাত্ররা দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন শিক্ষাজীবনে দুটি তৃতীয় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে সনদপত্র জালিয়াতি করে দ্বিতীয় বিভাগে চাকরি নিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি পদধারী এই পলিটিশিয়ান ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিধি বহির্ভূতভাবে এডহক কমিটির মাধ্যমে চাকরিতে যোগদান করেন। শুধু এই প্রতিষ্ঠানই নয়, তিনি চাকরি জীবনে প্রথম প্রধান শিক্ষকও হয়েছেন বিধিবহির্ভূত ভাবে। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১২ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়াই তিনি তথ্য গোপন করে হয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক।

রফিকুল আমিন কাজলের বাবা একজন অমুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও নিজের বাবাকে একাত্তরের সংগ্রাম কমিটির সদস্য দাবি করে ভুয়া মুক্তযোদ্ধা সনদ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিসহ নিয়েছেন বিশেষ সুবিধা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিপত্র অনুযায়ী শিক্ষাজীবনে কোনো তৃতীয় বিভাগ থাকলে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচন ক্যাটাগরিতে আবেদন করা যায় না। অথচ প্রধান শিক্ষকের এসএসসি ও এইচএসসিতে দুটি তৃতীয় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে তৃতীয় বিভাগকে দ্বিতীয় বিভাগে রূপান্তর করে নকল সার্টিফিকেট ও নিজের বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেখিয়ে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে দুই বার হয়ছেন উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক। যা সুস্পষ্ট দুর্নীতির সামিল।

ছাত্ররা দাবি করেন, ১৯৯৫ সালের জনবল কাঠামো পরিপত্র অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক পদে থেকে কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকার বিধান না থাকলেও রফিকুল আমিন স্কুলে বসেই চালিয়ে যাচ্ছেন তার ‘বনফুল’ নামক গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা। স্কুল গেটে তার পৃথক একটি গ্যার্স সিলিন্ডারের দোকানও রয়েছে। তার অফিস কক্ষে গ্যাস সিলিন্ডারের বিক্রয় প্রতিনিধিগণ নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন এবং স্কুল ফান্ডের টাকা ব্যক্তিগত গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ের কাজে ইনভেস্ট করেছেন বলে অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা।স্মরকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের সাথে জালিয়াতি করে ‘ব্যবসায়ী’ পরিচয়ে বর্তমান প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সমমানের একাধিক মাধ্যমিক স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও হয়েছেন তিনি। এ আর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া হাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হন এবং নিজের সভাপতিত্বে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনে নিয়োগ দিয়েছেন গৃদকালিন্দিয়া হাই স্কুলের নতুন প্রধান শিক্ষক, যা শিক্ষা বিভাগের সাথে সুস্পষ্ট প্রতরণা। উপজেলার মনতলা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়েও করেছেন নানাবিধ অনিয়ম।

নিজে আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় উপজেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজিয়া সুলতানাকে স্কুলে শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক হিসেবে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নারী নেত্রী রাজিয়া সুলতানা স্কুলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন যুব মহিলা লীগের সভাপতি হিসেবে। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে খার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।

স্কুলসূত্রে জানা যায়, যুব মহিলা লীগের নেত্রী হওয়ায় প্রধান শিক্ষক প্রোটোকল ডিঙ্গিয়ে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষকদের উপরে স্থান দিয়ে রাজিয়া সুলতানাকে বানিয়েছিলেন সিনিয়র শিক্ষক। শিক্ষক হাজিরা খাতায় সুলতানা রাজিয়ার নাম ছিলো শিক্ষকদের সারির সবার উপরে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে তার প্রতিবাদ করার সাহস পাননি কোনো সিনিয়র শিক্ষক। সিনিয়র হয়েও দিনের পর দিন সুলতানা রাজিয়ার মত একজন জুনিয়র শিক্ষকের কাছে অপমানিত হয়েছেন অনেকে। প্রধান শিক্ষক

রফিকুল আমিন কাজল স্কুলে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম সোহাগকে। সোহাগ কোনো ক্লাসে অংশ না নিলেও প্রতি মাসে তাকে নিয়ম করে বেতন দেয়া হতো স্কুল ফান্ড থেকে। প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রলীগ সভাপতি দুজন মিলে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগে যোগ দিতে ও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে যেতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে।

দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্য থাকায় স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ঢিলেঢালা ভাবে। নেতৃত্বহীন উপজেলার মডেল স্কুলটির এমন বেহাল দশা দেখে স্বয়ং অভিভাবকরাই প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন। সকলেরই দাবি, বিতর্কিত প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করে যোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষকের আসনে বসানো হোক। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা আশিকুল ইসলাম জানান, আমরা স্কুলের শিক্ষকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি উপজেলা বিএনপির কিছু পাতি নেতাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক স্কুলে ঢুকেছেন। উপজেলা বিএনপির নামধারী ঐ নেতারা স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের বলেছেন, প্রধান শিক্ষককে ভুলে আসতে কোনো শিক্ষক বাধা দিলে তার পা কেটে দেয়া হবে। তাই সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের পা কাটার দুঃসাহস যেই নেতারা দেখিয়েছেন তাদের প্রতিহত করতে এবং আওয়ামী লীগের দালাল অযোগ্য, অবৈধ প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে ছাত্র সমাজ ও অভিভাবকগণ মিলে আমরা স্কুলে যাই। প্রধান শিক্ষক যেন চোরের মত স্কুলে এসে স্কুলের আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব করতে না পারেন সেজন্যে আমরা তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত আসলে নতুন প্রধান শিক্ষককে স্বাগত জানিয়ে তালা খুলে দেয়া হবে।

অভিভাবকদের মধ্য থেকে স্কুলের সর্বশেষ নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটিরর সদস্য মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, আমি গত ৫ বছর ধরে একক ভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। যিনি নিয়োগের সময় লিখিত পরীক্ষায় মাত্র ০৩ (তিন) নম্বর পান, তিনি কী করে উপজেলা সদরস্থ একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক হন, তা আমার বোধগম্য হয়নি। তখনই আমি তার বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য বের করতে শুরু করি এবং ক্রমান্বয়ে জানতে পারি তার চাকরি জীবনের সকল নিয়োগ অবৈধ। তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি ডাবল থার্ড ক্লাস পাওয়া প্রধান শিক্ষক। স্কুলের টাকায় তার ব্যক্তিগত গ্যাসের ব্যবসা চলে। তার অযোগ্যতার কারণে মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছে না স্কুলের সাধারণ শিক্ষকগণ। নিজে একটি প্রতিষ্ঠানের অযোগ্য প্রধান শিক্ষক হয়েও মন্ত্রণালয়কে ভুল তথ্য দিয়ে আরও দুটি মাধ্যমিক স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন। এমন বাটপারি করতে পেরেছেন কেবল আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পেরেছেন বলেই। অযোগ্য প্রধান শিক্ষককে না অপসারণ করতে পারলে আমাদের সন্তানরাও অযোগ্য মানুষ হয়েই গড়ে উঠবে। রফিকুল আমিন কাজলের অযোগ্যতা নিয়ে মুখ খুলেছে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। ২০১৯ সালের এসএসসি ব্যাচের পরীক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন জানান, হেড স্যার গণিত ক্লাসে এসে অংক মেলাতে পারেন না। যখন বোর্ডে কোনো অংক মিলে না, তখনই তার জরুরি ফোন এসেছে বলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতেন। অসংখ্য দিন তিনি অসমাপ্ত অংক বোর্ডে রেখে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেছেন। * ২০২০ সালের এসএসসি ব্যাচের পরীক্ষার্থী জাকির হোসেন একই সুরে

বলেন, স্যার যখনই অংক করাতে গিয়ে আটকে যান, তখনই আমরা বুঝে নিতাম, এখনই স্যারের মোবাইলে কল চলে আসবে। ঠিক তেমনটাই হতো। ফোনে কল না আসলেও মোবাইল কানে দিয়ে কথা বলার অভিনয় করে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। ঘণ্টা পড়লে অংকটা বাসায় করে নিও বলে চলে যেতেন।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুলে অনেক ভালো গণিত শিক্ষক থাকলেও তাঁদের ক্লাস না দিয়ে দিনের পর দিন তিনিই গণিত ক্লাস নিয়ে গেছেন। অংক ক্লাসে এসে তার ব্যক্তি জীবনের ইতিহাস বলেও বহু ক্লাস নষ্ট করেছেন। তিনি সরকারি দলের পাওয়ারফুল লোক বলে আমরা তখন তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারিনি। আমরা চাই একজন ভালো, মেধাবী ও যোগ্য প্রধান শিক্ষক আমাদের স্কুলে আসুক।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন অনুপস্থিত তা আমার জানা ছিলো না। যদি তেমনটি হয় তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যস্থাগ্রহণ করে বিকল্প কাউকে দায়িত্ব দেয়া হবে। প্রধান শিক্ষকের অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের বিষয়ে জেলা প্রশাসক জানান, এ বিষয়ে প্রমাণ সাপেক্ষ অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।