ফরিদগঞ্জ ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নে মহিলা সমাবেশ ফরিদগঞ্জে বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবিতে এবার মহিলা দলের মানববন্ধন পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ফরিদগঞ্জে বিএনপি কর্মীদের টানা সড়ক অবরোধ মনোনয়ন বিতর্কে উত্তপ্ত ফরিদগঞ্জ, এনডিপির প্রেস ব্রিফিংয়ে তোলপাড় ফরিদগঞ্জ রাজনীতি ‘আমি রোহিঙ্গা হয়ে আসিনি, ফরিদগঞ্জেই আমার জন্ম’ – লায়ন হারুনুর রশিদ চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে বিএনপির নেতৃত্ব সংকট ঘিরে অরাজকতা—এনডিপি চেয়ারম্যানের তীব্র সমালোচনা ফরিদগঞ্জে মাদক মামলা সাক্ষী হওয়ার খেসারত দিতে হলো এক যুবককে ইসলামী ব্যাংকে একচ্চত্র ও অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ বিমানবন্দর থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী নেই, কার্যক্রম বন্ধ, তবু চলছে মাদ্রাসার নামে চাঁদা সংগ্রহ

ফরিদগঞ্জে তিন যুবদল কর্মী হত্যার ১১ বছর পর মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১২:৩৪:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৭৫ বার পড়া হয়েছে
ফরিদগঞ্জে তিন যুবদল কর্মী হত্যার ১১ বছর পর আদালতে মামলা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ রবিবার ফরিদগঞ্জ আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত যুবদল কর্মী আরিফ হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন। এতে ৩৩৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ৭৩৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবীতে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয় ১৮ দলীয় জোট। এরই অংশ হিসেবে ঐদিন বিকাল ৪ টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার জোট নেতাকর্মীরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা একযোগে মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়। ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি নাজমুল হকের দেওয়া তথ্যানুসারে মিছিলে ২৪২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ২৯ রাউন্ড চায়না পিস্তলের গুলি ও ১১ রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ছোঁড়া হয়। মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলের তিন কর্মী জাহাঙ্গীর বেপারী, আরিফ হোসেন ও বাবুল ভূঁইয়া নিহত হন। পরিবারের পক্ষ থেকে ঐ সময়ে মামলা করা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাল্টা মামলার কারণে তাদের মামলাগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং উল্টো মামলায় বাড়িঘর ছাড়তে হয় তাদের। ১১ বছরের অধিক সময় মুখ বুঝে সব সহ্য করলেও জুলাই আন্দোলনে পট পরিবর্তন হলে বিচারের প্রত্যাশায় নতুন করে বুক বাঁধেন ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনরা। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে আদালতে মামলা করেন নিহত আরিফ হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, জাহিদুল ইসলাম রোমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম কাজল, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহফুজুল হক, যুবলীগ নেতা মো. মাসুদ হোসেন ভুঞা (কিলার মাসুদ), উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. অহিদুর রহমান রানা, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম রিপন, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারী আকবর হোসেন মনিরসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৩৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০০ জনসহ মোট ৭৩৫ জনকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। তবে এতে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের কাউকে আসামী করা হয়নি।

নিহত জাহাঙ্গীর বেপারী উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর তিনকড়ি বেপারী বাড়ির আব্দুল মতিন বেপারী ও তফুরেরনেছা দম্পতির ছোট ছেলে। রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের আব্দুল আলিম ও হাজেরা বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও সফুরা বেগমের ছেলে বাবুল ভূঁইয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করেছি। আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

মামলার আইনজীবী মো. আবুল খায়ের স্বপন বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নেয়ার পর তৎকালীন সময়ে ফরিদগঞ্জ থানায় যে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে ঐ মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মামলাটির পরবর্তী নির্দেশনা আসবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফরিদগঞ্জে তিন যুবদল কর্মী হত্যার ১১ বছর পর মামলা

আপডেট সময় : ১২:৩৪:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ফরিদগঞ্জে তিন যুবদল কর্মী হত্যার ১১ বছর পর আদালতে মামলা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ রবিবার ফরিদগঞ্জ আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত যুবদল কর্মী আরিফ হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন। এতে ৩৩৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ৭৩৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবীতে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয় ১৮ দলীয় জোট। এরই অংশ হিসেবে ঐদিন বিকাল ৪ টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার জোট নেতাকর্মীরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা একযোগে মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়। ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি নাজমুল হকের দেওয়া তথ্যানুসারে মিছিলে ২৪২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ২৯ রাউন্ড চায়না পিস্তলের গুলি ও ১১ রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ছোঁড়া হয়। মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলের তিন কর্মী জাহাঙ্গীর বেপারী, আরিফ হোসেন ও বাবুল ভূঁইয়া নিহত হন। পরিবারের পক্ষ থেকে ঐ সময়ে মামলা করা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাল্টা মামলার কারণে তাদের মামলাগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং উল্টো মামলায় বাড়িঘর ছাড়তে হয় তাদের। ১১ বছরের অধিক সময় মুখ বুঝে সব সহ্য করলেও জুলাই আন্দোলনে পট পরিবর্তন হলে বিচারের প্রত্যাশায় নতুন করে বুক বাঁধেন ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনরা। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে আদালতে মামলা করেন নিহত আরিফ হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, জাহিদুল ইসলাম রোমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম কাজল, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহফুজুল হক, যুবলীগ নেতা মো. মাসুদ হোসেন ভুঞা (কিলার মাসুদ), উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. অহিদুর রহমান রানা, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম রিপন, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারী আকবর হোসেন মনিরসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৩৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০০ জনসহ মোট ৭৩৫ জনকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। তবে এতে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের কাউকে আসামী করা হয়নি।

নিহত জাহাঙ্গীর বেপারী উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর তিনকড়ি বেপারী বাড়ির আব্দুল মতিন বেপারী ও তফুরেরনেছা দম্পতির ছোট ছেলে। রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের আব্দুল আলিম ও হাজেরা বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও সফুরা বেগমের ছেলে বাবুল ভূঁইয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করেছি। আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

মামলার আইনজীবী মো. আবুল খায়ের স্বপন বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নেয়ার পর তৎকালীন সময়ে ফরিদগঞ্জ থানায় যে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে ঐ মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মামলাটির পরবর্তী নির্দেশনা আসবে।