ফরিদগঞ্জে ঘুষের টাকা না দেওয়ায় ভাতার বই বাতিলের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৭:৫২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
ফরিদগঞ্জে ঘুষের টাকা না দিতে পারায় ভাতার কার্ড বাতিলের অভিযোগ উঠেছে এক সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অর্চনা রানী সরকার জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী, নিজেস্ব সম্পত্তি না থাকায় সরকারি সম্পত্তির উপর অস্থায়ী ঘর তুলে বসবাস করেন।পারিবারিক অভার অনটনের কারণে মন্দিরে পরিস্কার পরিচ্চন্নতার কাজ করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় দীর্ঘ ৭ বছর ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছেন। এমন অসহায়য়ের ভাতা বাতিল করেছেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের ফিল্ড সুপার ভাইজার পান্না রহমান। হঠাৎ নিজের বইতে টাকা জমা না হওয়ায়, সমাজ সেবা অফিসে ছুটে যান অর্চনা রানী সরকার। জানতে পারেন অর্চনা রানী সরকার প্রতিবন্ধী নয়। একথা শুনেই যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থা। কাকুতি মিনতি করতে থাকেন অর্চনা রানী সরকার । অর্চনা রানী সরকারের অসহায়ত্বে এক পর্যায়ে মন নরম হলে ফিল্ড সুপার ভাইজার পান্না রহমান জানান, ১০ হাজার টাকা দিতে হবে । ১০ হাজার টাকা দিলেই ভাতার বই ঠিক করে দেওয়া হবে।
প্রতিবন্ধী অর্চনা রানী বলেন, তারা আমার ভাতার বই রেখে দিয়ে বলে আপনি প্রতিবন্ধী না, এরপর তারা আমার সারা শরীর দেখাতে বলে,আমি দেখাই। পরের দিন যাওয়ার পর বলে আপনার বই ক্যান্সেল (বাতিল) তারপর পান্না রহমান বলেন, আপনার ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। তাহলে বই ঠিক করে দিবে।
১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করার বিষয়ে জানতে চাইলে ফিল্ড সুপার ভাইজার পান্না রহমান এই প্রতিনিধিকে জানান, ওনার ( অর্চনা রানীর) সুবর্ণ নাগরিক কার্ডটি নাই। প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য উনি ( অর্চনা রানী ) যখন আসছে তখন তাকে শুধু একথা বলা হয়েছে,একজন অর্থপেডিক ডাক্তার দেখাইয়া একটা প্রত্যায়ন আনতে। এরপর এই কার্ডটা (সুবর্ন নাগরিক) কার্ডটা হলে একদম এ্যাকুরেট হয়ে যাবে, আর কিছুনা।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রতিবন্ধী সনাক্ত করার বিষয়টা ডাক্তারী বিষয়, আমরা যদি সন্দেহ হওয়ার মত দেখি তখনই ডাক্তারের কাছে পাঠাই , প্রয়োজনীয় উপদেশ দেই। যদি কেউ এধরনের বিষয়ের ( ঘুষ লেনদেনে) জড়িত থাকে এবং প্রতিয়মান হয় অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনই নয়,পরিচয় গোপন রাখার শর্তে অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা জানান, অফিসের উচ্চমান সহকারি অফিসসহ অন্যান্যদের কোন কারণ ব্যাতিত অফিসের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন সুপারভাইজার ফারজানা ও ফিল্ড সুপারভাইজার পান্না রহমানের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে, নিজেও সুবিধা নিয়ে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এদিকে ইউনিয়ন সমাজ কর্মীরা ইউনিয়নে না যাওয়ায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ জনগন।
ভাতার বই বাতিলের বিষয়ে পরিত্রান পেতে অর্চনা রানী সরকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় লিখিত আবেদন করেছেন।