ফরিদগঞ্জের শিশু সোহান হত্যার রহস্য উম্মোচন
- আপডেট সময় : ০২:০৬:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ ৪১৯ বার পড়া হয়েছে
ফরিদগঞ্জে চাঞ্চল্যকর শিশু আদিল মোহাম্মদ সোহান হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। নিহত সোহানের গৃহশিক্ষক এসএসসি পরীক্ষার্থী আ: আহাদ (১৮) মুক্তিপণ আদায়ের আশায় অপহরণ ও পরে হত্যা করে।
বুধবার (২৪মে) দুপুরে চাঁদপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার বিষয়ে অবহিত করেন। সোহানের লাশ উদ্ধারের পর চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ এর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ( অপরাধ) এর নেতৃত্বে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল মান্নান, ওসি(তদন্ত) প্রদীপ কুমার মন্ডল, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জামাল, এস আই রুবেল ফরাজী ও এএস আই আবু নাঈম টানা ৫ দিন পরিশ্রম করে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেন।
প্রেস ব্রিফিং ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মে মাগরিবের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে শিশু আদিল মোহাম্মদ সোহান নিঁখোজ হয়। তার বাবা আনোয়ার হোসেন পরদিন থানায় জিডি করেন। নিঁখোজের ৪দিন পর গত ১৯মে শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশের একটি জমিতে মাটিচাপা অবস্থায় সোহানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, আ: আহাদসহ হত্যার সময় ব্যবহৃত জামা-কাপড় ও হাত দা উদ্ধার করা হয়েছে। এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আ: মান্নান জানান, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) পলাশ কান্তি নাথ এর নেতৃত্বে আমরা থানা পুলিশ ৫ দিনের পরিশ্রমে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছি।
অপরাধী কিশোর আ: আহাদকে গ্রেফতার এবং মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।এব্যাপারে ওইদিনই সোহানের পিতা আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে সোহানের গৃহশিক্ষক ও এসএসসি পরীক্ষার্থী আ: আহাদকে সন্দেহজনক আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আ: আহাদ (১৮) হত্যার কথা স্বীকার করে।
পুলিশের কাছে সে জানায়, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল সিআইডির দেখে সে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল দেখে অনুপ্রাণিত হয়। সোহানের গৃহ শিক্ষক আহাদ মাত্র ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সোহান কে লুকিয়ে রাখে। ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি তে সে দেখেছে কাউকে চল্লিশ সেকেন্ড নাক চেপে ধরে রাখলে সে কিছুক্ষন অজ্ঞান হবে কিন্তু মারা যাবে না।
ঘটনার দিন ১৫ মে মাগরিব নামাজের পর সোহান বাড়ি ফেরার সময় তাকে অপহরণ করে পাশবর্তী নার্সারীতে নিয়ে মুখ ও গলা চেপে ধরলে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে আহাদ তার মায়ের মুঠো ফোনে নতুন সিমকার্ড দিয়ে সোহানের মা ফাতেমা বেগমের মুঠো ফোনে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কল করে কিন্তু, কল রিসিভ না করায় সে ফিরে গিয়ে সোহানের নিস্তেজ দেহ দেখে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে তার মরদেহ নার্সারীতে ফেলে রাখে এবং সেও সোহানের পরিবারের অন্য সদস্যের মতো সোহানকে খুঁজতে বের হয়। রাত গভীর হলে তার চাচীর রান্না ঘর থেকে হাত দা নিয়ে বাড়ির পাশের একটি জমিতে গর্ত খুঁড়ে মাটিচাপা দেয় সোহানকে। পরবর্তী সে নতুন সিমকার্ডটি পুকুরে ফেলে দেয়।