ফরিদগঞ্জ ১২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে হনুফা খাতুনের মৃত্যুতে শোকের মাতম, দাফন সম্পন্ন ফরিদগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লায়ন আল-আমিনের লিফলেট বিতরণ ফরিদগঞ্জ কে আর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ ফরিদগঞ্জে যুবদলের দ্বি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন ফরিদগঞ্জে সড়কের কাজে ধীরগতি ।। জনদুর্ভোগ চরমে ফরিদগঞ্জে ‘প্রত্যাশা স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা’র মেধাবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ফরিদগঞ্জে পাইকপাড়া গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন ফরিদগঞ্জে পূর্ব বড়ালী ডে-নাইট মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ‘ফরিদগঞ্জ স্পোর্টস ক্লাব’ ফরিদগঞ্জে পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি’র শীতের উপহার সামগ্রী বিতরণ ফরিদগঞ্জে জেলা প্রশাসনের কম্বল বিতরণ

ফরিদগঞ্জের কড়ৈতলীতে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

 

ব্যক্তিগত সমস্যাকে মসজিদে টেনে এনে কমিটির সেক্রেটারিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা করছেন প্রতিপক্ষ। শুধু তকমা দিয়েই খ্যান্ত হননি, অসাধু চক্রটি ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে বায়োনাট, বস্তুুনিষ্টহীন ভুয়া সংবাদও প্রকাশ করেছে তার বিরুদ্ধে। মসজিদ কমিটির একজন সাধারণ সম্পাদককে এইভাবে হ্যানস্তা করার কারণে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের কড়ৈতলী মজুমদার বাড়ি জামে মসজিদের মুসল্লিদের প্রস্তাব সমর্থনের ভিত্তিতে মফিজুল ইসলামকে সেক্রেটারি নির্বাচিত করা হয়। এলাকার মুসল্লিদের মতে উনি ভালোভাবেই মসজিদ পরিচালনা করে আসতেছেন। ৩ জানুয়ারি জুমার নামাজ শেষে সুমন মজুমদার সেক্রেটারির অনুমতি নিয়ে মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও ভারতের রিয়াসাতে রামপুরের পীর হযরত মাওলানা আতিকুল্লাহ মোজাদ্দেদীয়া আলফেসানীকে মসজিদে আনার প্রস্তাব করেন। তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করে তাকে বসিয়ে দেন ফরিদ মজুমদার। সেক্রেটারি ফরিদকে অনুরোধ করেন চুপ থাকার জন্য, প্রয়োজেন সুমনের কথা শেষে তাকেও কথা বলতে বলেন কিন্তু ফরিদ না থেমে চিৎকার করতে করতে মসজিদ থেকে বের হয়ে যান। ফরিদের এমন আচরণের কারণে দুই জুমায় অনেক মুসল্লি সে মসজিদে নামাজ পড়তে আসেননি বলে জানান এলাকাবাসী। সুমন মজুমদার মসজিদ কমিটির সাবেক সেক্রেটারির শাহ আলমের ছেলে। সে সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের কারণে কমিটি পরিবর্তন করা হয় বলে মুসল্লিরা জানান। তাছাড়া সুমন মজুমদারের সাথে ফরিদ মজুমদারদের মধ্যে পূর্ব থেকে সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। ফরিদ মজুমদারের অভিযোগ সুমন মজুমদার তাদের সম্পত্তি দখল করে সেখানে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। মূলত সুমন মজুমদারের বাবা ফরিদ মজুমদারের চাচা বেলায়েত মজুমদারের কাছ থেকে জায়গা কিনেন এবং বাড়ির মহিলাদের পর্দার জন্য টিনের বেড়া দেন। এই বেড়া নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে সুমন এবং ফরিদের সাথে বিরোধ। আর সেই বিরোধ থেকেই ফরিদ সেদিন জুমাবারে সুমনকে মসজিদে কথা বলতে দেননি। বিষয়টি ভালো ভাবে নেননি বর্তমান সেক্রেটারি মফিজুল ইসলাম খান। তিনি দল মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে মসজিদ চালাতে চাচ্ছেন এবং মসজিদ চালানোর জন্য যে সহযোগিতা করবে তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে ফরিদ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই গত ২৪ জানুয়ারি জুমার নামাজ শেষে সেক্রেটারি মফিজুল ইসলাম মসজিদে দাঁড়িয়ে ফরিদের বিষয়টি উপস্থাপন করেন এবং সবার কাছে সিদ্ধান্ত জানতে চান। প্রতিবাদে ফরিদ মজুমদার, মফিজুল ইসলামকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন এবং সেক্রেটারি হিসেবে তাকে মানেন বলে চিৎকার করতে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে সেক্রেটারি ফরিদকে ধাক্কা দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। প্রতিবাদে ফরিদ মজিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তারও কয়েকদিন পর স্থানীয় একটি পত্রিকায় মফিজুল ইসলামকে জড়িয়ে ‘’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যেখানে ফরিদ মজুমদারের বক্তব্য কোড করা হয় কিন্তু অভিযুক্ত মফিজুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়া হয়নি।

সাংবাদিকদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্য তুলে আনার চেষ্টা করলে যা জানা যায়, ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানো জঘন্য অপরাধ। এমন ন্যাক্কারজনক কাজ যারা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান এলাকাবাসী। যারা এই অপকর্মকে সহযোগীতা করছেন তারা সমাজে একটি খারাপ সংস্কৃতি চালুর পায়তারা করছেন। আজ যারা এটা করছেন বা সহযোগিতা করছেন হয়তো একদিন তারাও এর শিকার হতে পারেন। এই অপসংস্কৃতি রুখতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ফরিদ মজুমদার নিজেকে বিএনপির নেতা দাবী দিন দিন বেপোরোয়া হয়ে উঠছে। তিনি ৮নং ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি অথচ দীর্ঘ সময় ধরে তিনি প্রবাসে ছিলেন। প্রবাস থেকে এসেছেন মাত্র মাস খানেক হলো।

ফরিদ মজুমদার বলেন, ‘উনি (মফিজুল ইসলাম) আমাকে অপমান অপদস্ত করে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছেন। তাই আমি তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি। মূলত তার সাথে আমার কোনো বিরোধ নেই। সুমন মজুমদার দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের জায়গা দখল করে টিনের বেড়া দিয়ে রাখছে। মসজিদের টাকা লুটপাট করে খেয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে কথা বলছি কিন্তু মফিজ সাহেব তার পক্ষ হয়ে কথা বলছে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তার বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করিনি। সে ইয়াবা ব্যবসায়ী কিনা জানিনা। এ বিষয়ে কোনো সাংবাদিকই বক্তব্য দেই নি। পত্রিকায় কেন আমার বক্তব্য কোড করছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।’

সুমন মজুমদার বলেন, ‘ভাই আমি সেক্রেটারির অনুমতি নিয়ে মসজিদে কথা বলতে গেছি কিন্তু ফরিদ আমাকে অপমান অপদস্ত করেছে। আমার বাবা ফরিদের চাচা বেলায়েত মজুমদারের কাছ থেকে আধা শতাংশ জায়গা কিনেছে এবং সেখানে নারীদের পর্দার জন্য টিনের বেড়া দিয়েছি।’

মফিজুল ইসলাম বলেন, আমি সবাইকে নিয়ে মসজিদ চালাতে চাচ্ছি কিন্তু কয়েকজন তা হতে দিচ্ছে না। ফরিদকে বলেছি ওকে (সুমন) কথা বলতে দে। প্রয়োজনে তুইও কথা বলিস কিন্তু সে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মুসল্লিদের মধ্যে ডিভাইড করে দিয়েছে। মুসল্লিরা মসজিদ ছেড়ে দিচ্ছে। সে মসজিদে বসে আমার সাথে খারাপ আচরন করেছে তাই বাধ্য হয়ে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে আমাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট করলো। এভাবে চলতে থাকলে কেউ আর অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে না, ভালো কাজে আসবে না। আমি এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ করছি এবং এমন ধরনের লোকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাচ্ছি।

কড়ৈতলী মজুমদার বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কামাল হোসেন বলেন, ‘ভারতের একজন হুজুরকে মসজিদে আনার প্রস্তাব করতে সুমন মসজিদে দাঁড়ালে সাথে সাথে ফরিদ বাধা দেয়। এতে মসজিদে হট্টোগোল বাধে এবং মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যায়।’ মসজিদ কমিরি সভাপতি হাসিম খান (০১৭১৫-১৬০৩১৪) এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কড়ৈতলি মজুমদার বাড়ির সামনে থাকা চা’র দোকানে আড্ডার মাধ্যমে স্থানীয়দের কাছে জিজ্ঞাস করা হলে উপস্থিত থাকা মানুষরা জানান, “মফিজ ভালো লোক, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।” মজুমদার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতেই একজন নারী দেখা পাই। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মফিজ খান ভালো মানুষ, তিনি ঢাকায় থাকেন।”

বাড়ির সামনে এক বয়োজৈষ্ঠ কুটির শিল্প নির্মাতা আবদুর রহিম বলেন, ‘মফিজ প্রথমে ছিলো বিদেশে, পরে চট্টগ্রামে ফলের ব্যবসা করতো, এখন ঢাকাতে চাকরি করে। সে এ ধরনের কাজ করার প্রশ্নই আসে না। এটা মিথ্যা ঘটনা তৈরি করা হয়েছে। মফিজ খান মজুমদার বাড়ির বাসিন্দা না হলেও মানুষ তাকে এ বাড়ির মসজিদের সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচন করে। আর তিনি মানুষ ভালো না হলেত তাকে মসজিদের সেক্রেটারি বানাতেন না। মজুমদার বাড়ির দু’পক্ষের ব্যাক্তিগত শত্রুতার জেরে মফিজকে পাষানো হচ্ছে।’

ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মোবারক হোসেন বলেন, ‘ব্যক্তিগত বিষয় মসজিদে নিয়ে এসে জামেলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, এছাড়া অন্য কিছু না। মফিজ খান থাকে ঢাকায়, চাকরি করেন। উনি ইয়াবা বা মাদক এসবের সাথে জড়িত না। এসব মিথ্যা।

ইউপি সদস্য মো. সেলিম জিতু বলেন, ‘এ বাড়ির মূল সমস্যা হলো মাহফিল নিয়ে, প্রথম যেদিন মাহফিল নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয় সেদিন আমি উপস্থিত ছিলাম। পরে গত শুক্রবারে মসজিদে জামেলা হয়েছে তা শুনেছি। কিন্তু মফিজ খানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় যে তথ্য লিখা হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা।’

৮নংপাইকপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ মিয়াজী বলেন, মূলত ফরিদ আর সুমনদের সাথে সামান্য একটু জায়গা নিয়ে সমস্যা। এই জায়গাটি মূলত সুমনরা বেলায়েত মজুমদারের কাছ থেকে কিনেছে এবং সেখানে পর্দার জন্য বেড়া দিয়েছে। ফরিদ শুধু শুধু সেখানে জামেলা করছে।’ মফিজ খান মাদক বা ইয়াবার সাথে জড়িত না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ফরিদগঞ্জের কড়ৈতলীতে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা

আপডেট সময় : ১১:০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

 

ব্যক্তিগত সমস্যাকে মসজিদে টেনে এনে কমিটির সেক্রেটারিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা করছেন প্রতিপক্ষ। শুধু তকমা দিয়েই খ্যান্ত হননি, অসাধু চক্রটি ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে বায়োনাট, বস্তুুনিষ্টহীন ভুয়া সংবাদও প্রকাশ করেছে তার বিরুদ্ধে। মসজিদ কমিটির একজন সাধারণ সম্পাদককে এইভাবে হ্যানস্তা করার কারণে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের কড়ৈতলী মজুমদার বাড়ি জামে মসজিদের মুসল্লিদের প্রস্তাব সমর্থনের ভিত্তিতে মফিজুল ইসলামকে সেক্রেটারি নির্বাচিত করা হয়। এলাকার মুসল্লিদের মতে উনি ভালোভাবেই মসজিদ পরিচালনা করে আসতেছেন। ৩ জানুয়ারি জুমার নামাজ শেষে সুমন মজুমদার সেক্রেটারির অনুমতি নিয়ে মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও ভারতের রিয়াসাতে রামপুরের পীর হযরত মাওলানা আতিকুল্লাহ মোজাদ্দেদীয়া আলফেসানীকে মসজিদে আনার প্রস্তাব করেন। তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করে তাকে বসিয়ে দেন ফরিদ মজুমদার। সেক্রেটারি ফরিদকে অনুরোধ করেন চুপ থাকার জন্য, প্রয়োজেন সুমনের কথা শেষে তাকেও কথা বলতে বলেন কিন্তু ফরিদ না থেমে চিৎকার করতে করতে মসজিদ থেকে বের হয়ে যান। ফরিদের এমন আচরণের কারণে দুই জুমায় অনেক মুসল্লি সে মসজিদে নামাজ পড়তে আসেননি বলে জানান এলাকাবাসী। সুমন মজুমদার মসজিদ কমিটির সাবেক সেক্রেটারির শাহ আলমের ছেলে। সে সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের কারণে কমিটি পরিবর্তন করা হয় বলে মুসল্লিরা জানান। তাছাড়া সুমন মজুমদারের সাথে ফরিদ মজুমদারদের মধ্যে পূর্ব থেকে সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। ফরিদ মজুমদারের অভিযোগ সুমন মজুমদার তাদের সম্পত্তি দখল করে সেখানে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। মূলত সুমন মজুমদারের বাবা ফরিদ মজুমদারের চাচা বেলায়েত মজুমদারের কাছ থেকে জায়গা কিনেন এবং বাড়ির মহিলাদের পর্দার জন্য টিনের বেড়া দেন। এই বেড়া নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে সুমন এবং ফরিদের সাথে বিরোধ। আর সেই বিরোধ থেকেই ফরিদ সেদিন জুমাবারে সুমনকে মসজিদে কথা বলতে দেননি। বিষয়টি ভালো ভাবে নেননি বর্তমান সেক্রেটারি মফিজুল ইসলাম খান। তিনি দল মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে মসজিদ চালাতে চাচ্ছেন এবং মসজিদ চালানোর জন্য যে সহযোগিতা করবে তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে ফরিদ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই গত ২৪ জানুয়ারি জুমার নামাজ শেষে সেক্রেটারি মফিজুল ইসলাম মসজিদে দাঁড়িয়ে ফরিদের বিষয়টি উপস্থাপন করেন এবং সবার কাছে সিদ্ধান্ত জানতে চান। প্রতিবাদে ফরিদ মজুমদার, মফিজুল ইসলামকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন এবং সেক্রেটারি হিসেবে তাকে মানেন বলে চিৎকার করতে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে সেক্রেটারি ফরিদকে ধাক্কা দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। প্রতিবাদে ফরিদ মজিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তারও কয়েকদিন পর স্থানীয় একটি পত্রিকায় মফিজুল ইসলামকে জড়িয়ে ‘’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যেখানে ফরিদ মজুমদারের বক্তব্য কোড করা হয় কিন্তু অভিযুক্ত মফিজুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়া হয়নি।

সাংবাদিকদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্য তুলে আনার চেষ্টা করলে যা জানা যায়, ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানো জঘন্য অপরাধ। এমন ন্যাক্কারজনক কাজ যারা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান এলাকাবাসী। যারা এই অপকর্মকে সহযোগীতা করছেন তারা সমাজে একটি খারাপ সংস্কৃতি চালুর পায়তারা করছেন। আজ যারা এটা করছেন বা সহযোগিতা করছেন হয়তো একদিন তারাও এর শিকার হতে পারেন। এই অপসংস্কৃতি রুখতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ফরিদ মজুমদার নিজেকে বিএনপির নেতা দাবী দিন দিন বেপোরোয়া হয়ে উঠছে। তিনি ৮নং ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি অথচ দীর্ঘ সময় ধরে তিনি প্রবাসে ছিলেন। প্রবাস থেকে এসেছেন মাত্র মাস খানেক হলো।

ফরিদ মজুমদার বলেন, ‘উনি (মফিজুল ইসলাম) আমাকে অপমান অপদস্ত করে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছেন। তাই আমি তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি। মূলত তার সাথে আমার কোনো বিরোধ নেই। সুমন মজুমদার দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের জায়গা দখল করে টিনের বেড়া দিয়ে রাখছে। মসজিদের টাকা লুটপাট করে খেয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে কথা বলছি কিন্তু মফিজ সাহেব তার পক্ষ হয়ে কথা বলছে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তার বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করিনি। সে ইয়াবা ব্যবসায়ী কিনা জানিনা। এ বিষয়ে কোনো সাংবাদিকই বক্তব্য দেই নি। পত্রিকায় কেন আমার বক্তব্য কোড করছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।’

সুমন মজুমদার বলেন, ‘ভাই আমি সেক্রেটারির অনুমতি নিয়ে মসজিদে কথা বলতে গেছি কিন্তু ফরিদ আমাকে অপমান অপদস্ত করেছে। আমার বাবা ফরিদের চাচা বেলায়েত মজুমদারের কাছ থেকে আধা শতাংশ জায়গা কিনেছে এবং সেখানে নারীদের পর্দার জন্য টিনের বেড়া দিয়েছি।’

মফিজুল ইসলাম বলেন, আমি সবাইকে নিয়ে মসজিদ চালাতে চাচ্ছি কিন্তু কয়েকজন তা হতে দিচ্ছে না। ফরিদকে বলেছি ওকে (সুমন) কথা বলতে দে। প্রয়োজনে তুইও কথা বলিস কিন্তু সে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মুসল্লিদের মধ্যে ডিভাইড করে দিয়েছে। মুসল্লিরা মসজিদ ছেড়ে দিচ্ছে। সে মসজিদে বসে আমার সাথে খারাপ আচরন করেছে তাই বাধ্য হয়ে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে আমাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট করলো। এভাবে চলতে থাকলে কেউ আর অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে না, ভালো কাজে আসবে না। আমি এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ করছি এবং এমন ধরনের লোকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাচ্ছি।

কড়ৈতলী মজুমদার বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কামাল হোসেন বলেন, ‘ভারতের একজন হুজুরকে মসজিদে আনার প্রস্তাব করতে সুমন মসজিদে দাঁড়ালে সাথে সাথে ফরিদ বাধা দেয়। এতে মসজিদে হট্টোগোল বাধে এবং মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যায়।’ মসজিদ কমিরি সভাপতি হাসিম খান (০১৭১৫-১৬০৩১৪) এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কড়ৈতলি মজুমদার বাড়ির সামনে থাকা চা’র দোকানে আড্ডার মাধ্যমে স্থানীয়দের কাছে জিজ্ঞাস করা হলে উপস্থিত থাকা মানুষরা জানান, “মফিজ ভালো লোক, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।” মজুমদার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতেই একজন নারী দেখা পাই। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মফিজ খান ভালো মানুষ, তিনি ঢাকায় থাকেন।”

বাড়ির সামনে এক বয়োজৈষ্ঠ কুটির শিল্প নির্মাতা আবদুর রহিম বলেন, ‘মফিজ প্রথমে ছিলো বিদেশে, পরে চট্টগ্রামে ফলের ব্যবসা করতো, এখন ঢাকাতে চাকরি করে। সে এ ধরনের কাজ করার প্রশ্নই আসে না। এটা মিথ্যা ঘটনা তৈরি করা হয়েছে। মফিজ খান মজুমদার বাড়ির বাসিন্দা না হলেও মানুষ তাকে এ বাড়ির মসজিদের সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচন করে। আর তিনি মানুষ ভালো না হলেত তাকে মসজিদের সেক্রেটারি বানাতেন না। মজুমদার বাড়ির দু’পক্ষের ব্যাক্তিগত শত্রুতার জেরে মফিজকে পাষানো হচ্ছে।’

ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মোবারক হোসেন বলেন, ‘ব্যক্তিগত বিষয় মসজিদে নিয়ে এসে জামেলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, এছাড়া অন্য কিছু না। মফিজ খান থাকে ঢাকায়, চাকরি করেন। উনি ইয়াবা বা মাদক এসবের সাথে জড়িত না। এসব মিথ্যা।

ইউপি সদস্য মো. সেলিম জিতু বলেন, ‘এ বাড়ির মূল সমস্যা হলো মাহফিল নিয়ে, প্রথম যেদিন মাহফিল নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয় সেদিন আমি উপস্থিত ছিলাম। পরে গত শুক্রবারে মসজিদে জামেলা হয়েছে তা শুনেছি। কিন্তু মফিজ খানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় যে তথ্য লিখা হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা।’

৮নংপাইকপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ মিয়াজী বলেন, মূলত ফরিদ আর সুমনদের সাথে সামান্য একটু জায়গা নিয়ে সমস্যা। এই জায়গাটি মূলত সুমনরা বেলায়েত মজুমদারের কাছ থেকে কিনেছে এবং সেখানে পর্দার জন্য বেড়া দিয়েছে। ফরিদ শুধু শুধু সেখানে জামেলা করছে।’ মফিজ খান মাদক বা ইয়াবার সাথে জড়িত না।