পুলিশ কর্মকর্তার হেয়ালিপনায় নির্দোষ আরিফ হলেন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী
- আপডেট সময় : ০৮:৩৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২৫ বার পড়া হয়েছে
আদালতে বা থানায় কোনো মামলা না থাকলেও শুধুমাত্র নামের মিলের কারণে আরিফ হোসেন (৩৬) নামে এক ব্যক্তি ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হলেন। পুলিশের ভুলের কারণে মৃগী রোগী আরিফকে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হতে হলো। অথচ যেই মামলায় পুলিশ নির্দোষ আরিফকে গ্রেফতার করেছে সেই মামলার আসামী আরিফ বর্তমানে ইতালি প্রবাসী। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ।
জানা গেছে, উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহাপুর ও ইছাপুরা পাশাপাশি দুটি গ্রাম। জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্ৰ করে সাহাপুর গ্রামের কাশেম আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম তার দেবর আমিন উল্যার পুত্র আরিফ (২৪)সহ কয়েকজনকে আসামী করে আদালতে মামলা (নং-১২০৪/২০২২) দায়ের করেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত আরিফের নামে ফরিদগঞ্জ থানায় ওয়ারেন্ট আসে।
পুলিশের এএসআই নুরুন্নবী ওয়ারেন্ট যাচাই-বাছাই না করে গত ২৩ নভেম্বর সকালে ওই ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের আমিন হকের ছেলে আরিফ হোসেন (৩৬)কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় আরিফের পরিবারের সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই এবং আরিফ অসুস্থ বললেও ওই পুলিশ কর্মকর্তা কর্ণপাত করেননি।পরে আরিফের পরিবার ওইদিনই চাঁদপুর আদালতের মাধ্যমে আরিফকে জামিনে নিয়ে আসেন। কিন্তু বাড়িতে এসে জানতে পারেন আরিফকে যেই মামলায় গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেই মামলার আসামী আরিফ নয়। পরে ২৬ নভেম্বর চাঁদপুর আদালত থেকে মামলার নথি উঠিয়ে তারা নিশ্চিত হন।
সরেজমিনে গিয়া জানা যায় রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামে পিয়ে কথা হয় ওই গ্রামের আমিন হকের সাথে। তিনি জানান, তাদের সাথে পার্শ্ববর্তী আতর আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করে। কয়েক মাস পূর্বের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই সালিসি বৈঠক হয়, কোনো মামলা রুজু হয়নি। কিন্তু ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে থানা পুলিশের এএসআই নুরুন্নবী এসে আমার ছেলে আরিফের নামে ওয়ারেন্ট আছে বলে রাস্তা থেকে টেনে হিচড়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ সময় মামলা নেই ও মৃগী রোগী বললেও পুলিশ কর্মকর্তা কর্ণপাত করেন নি। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি, পার্শ্ববর্তী সাহাপুর গ্রামের কাশেম আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগমের দায়েরকৃত মামলার আসামী হিসেবে আমার ছেলেকে আটক করা হয়েছে। অথচ ওই মামলার আসামী আরিফ বর্তমানে ইতালি প্রবাসী। আমি ধার দেনা করে ছেলেকে জামিনে মুক্ত করেছি।
ভুক্তভোগী আরিফ জানান, আমি কোনো মামলার আসামী না হলেও পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরে আমি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাই। আরিফের ভাই কামাল হোসেন বলেন, আরেক বাড়ির আরিফের নামে মামলা ছিল। কিন্তু নুরুন্নবী দারোগা আমাদের কোনো অনুরোধই শুনেননি । তাছাড়া আমাদের গ্রাম ইছাপুরা এবং তাদের গ্রাম সাহাপুর । সাহাপুর গ্রামের কাশেম আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, পুলিশ যেই আরিফকে ধরেছে, আমার মামলার আসামী সেই আরিফ না। আমার দেবপুত্র আরিফ বর্তমানে প্রবাসে রয়েছে।
প্রবাসী আরিফের ভাই মাসুদ হোসেন জানান, তার ভাই আরিফ বর্তমানে ইতালি রয়েছে। পুলিশ যাচাই-বাছাই ছাড়াই অসুস্থ হতদরিদ্র আরিফকে গ্রেফতার করেছে। পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এমারন হোসেন বলেন, আরিফকে আটকের কথা আমি প্রথমে শুনিনি। পরে শুনেছি। এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার এএসআই নুরুন্নবী জানান, আমি ওয়ারেন্টের সাথে নাম-ঠিকানা মিলে যাওয়ায় তাকে আটক করি। আদালত মনে করলে আমাকে তলব করবে