ফরিদগঞ্জ ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
১০ টাকার পোশাকে গরিবের শীত বিলাস ফরিদগঞ্জে প্রতিষ্ঠাবার্ষীকিতে স্বপ্নচূড়া সমাজ কল্যাণ সংস্থার ফ্রি ব্লাড ক্যাম্পিং  ফরিদগঞ্জে শীতার্তদের মাঝে আইএফআইসি ব্যাংকের কম্বল বিতরণ ফরিদগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি গঠন ফরিদগঞ্জে ট্রাক্টরে শেষ হচ্ছে ফসলি জমি ফরিদগঞ্জে এম এ হান্নান কল্যাণ ট্রাস্টের শীতবস্ত্র বিতরণ ফরিদগঞ্জে আই স্পোর্টস উন্মুক্ত ফুটবল টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ব্যাচ ফিফটিন ফরিদগঞ্জে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ ফরিদগঞ্জে নিউ আইডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’র ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণ ফরিদগঞ্জে কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে জামায়াতের মিছিল সমাবেশ

চাঁদা না পেয়ে অপহরন চেষ্টার অভিযোগে দুই পুলিশসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০ বার পড়া হয়েছে

 

 

চাঁদা না পেয়ে অপহরন চেষ্টার অভিযোগে দুই পুলিশসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ঢাকা নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী জামিল হোসাইন বাদী হয়ে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং- সি.আর. ৭৯৪/২৪।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বাদী এবং বিবাদী সকলেরই স্থায়ী ঠিকানা ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে কিন্তু তাদের কর্মক্ষেত্র ঢাকায়। বিবাদীদের ৭ জনের মধ্যে ৫ মুক্তিযোদ্ধা বাদশা পাঠান পরিবারের সদস্য এবং পতিত সরকারের সমর্থক ও সুবিধাভোগী। এদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল এবং মোহাম্মদ আলী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত আছেন। পেশাগত আনুকূল্য আর আওয়ামীলীগের প্রভাব কাজে লাগিয়ে বিগত হাসিনা সরকারের সময়ে এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, মামলা, হামলাসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন তারা। ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ তারিখে ঢাকা নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী (দোকান নং- ১০৯) জামিল হোসেনের কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। জামিল বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সমর্থক হওয়ায় এ সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন বিবাদীরা। গত ২৭ জুলাই, ২০২৪ নিউমার্কেটের দোকান থেকে জামিল হোসেনকে অপহরনের চেষ্টা চালান তারা এবং পুনরায় চাঁদা দাবী করেন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ভীতসন্ত্রস্ত জামিল তৎক্ষনাৎ এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৩ অক্টোবর, ২০২৪ তিনি নিউমার্কেট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি নং- ১৪১। জিডির বিষয়টি জানাজানি হলে ২২ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে বাদীর মোহাম্মদপুরস্থ বাসার নিচে এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিবাদীরা। বাদী বিষয়টি স্বীকার করলে পুনরায় তাঁকে অপহরন চেষ্টা চালিয়ে বিবাদীরা ব্যর্থ হয়। ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ভুক্তভোগী জামিল হোসেন চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৬৪/৩৮৫/৫০৬(II)/১০৯ ধারায় অপরাধের উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখের মধ্যে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত ৭ আসামীর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল, মোহাম্মদ আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন, আলমগীর হোসেন, নাহিদুল ইসলাম একই পরিবারের সদস্য। অপর আসামীরা হলেন একই গ্রামের মোঃ আলম ও মোঃ মহসিন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী জামিল হোসেন বলেন, আমি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় সমর্থক ছিলাম। ২৭ জুলাই প্রথমে তারা দোকানে এসে আমাকে বেদম মারধর করে এবং দোকান থেকে অপহরণের চেষ্টা করে। অন্যান্য ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সাথে পুলিশের পোশাকধারী কয়েকজন লোক যুক্ত হয়। তারাসহ মারধর করে আমাকে দোকান থেকে নিয়ে যায়। আন্দোলনের সমর্থক হওয়ায় নানান ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। একটা উল্লখযোগ্য টাকা দেওয়ার পর সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যাই। সরকার পতনের পর একটি জিডি করি। জিডির বিষয়টি জানতে পেরে তারা পুনরায় অপহরণ চেষ্টা চালায়। আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং আমার কাছ হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া ও আমাকে হয়রানীর ক্ষতিপূরণ দাবী করছি। মামলার সাক্ষী ইব্রাহীম মিয়াজীও অপহরণ চেষ্টার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্তরা আওয়ামীলীগ সরকারের সমর্থক ছিলেন। বিগত সময়ে বাল্য বিয়ে না পড়ানোয় ইমামকে মারধর, মসজিদ কমিটি নিয়ে আলেমদের পেটানো, জমি দখল, সরকারী প্রকল্প আত্মসাৎ, মামলা বাণিজ্য, সালিশ বাণিজ্যসহ এলাকার মানুষজন তাদের দ্বারা ব্যাপক জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরই জের ধরে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর মোস্তাফিজুর রহমান দুলালদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল বলেন, বিষয়টি ডাহা মিথ্যা। তাদের সাথে আমাদের সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। তবে তিনি ৫ আগস্ট তার বাড়িতে হামলার বিষয়টি স্বীকার করেন। দুলালের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেনও মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

চাঁদা না পেয়ে অপহরন চেষ্টার অভিযোগে দুই পুলিশসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

চাঁদা না পেয়ে অপহরন চেষ্টার অভিযোগে দুই পুলিশসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ঢাকা নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী জামিল হোসাইন বাদী হয়ে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং- সি.আর. ৭৯৪/২৪।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বাদী এবং বিবাদী সকলেরই স্থায়ী ঠিকানা ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে কিন্তু তাদের কর্মক্ষেত্র ঢাকায়। বিবাদীদের ৭ জনের মধ্যে ৫ মুক্তিযোদ্ধা বাদশা পাঠান পরিবারের সদস্য এবং পতিত সরকারের সমর্থক ও সুবিধাভোগী। এদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল এবং মোহাম্মদ আলী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত আছেন। পেশাগত আনুকূল্য আর আওয়ামীলীগের প্রভাব কাজে লাগিয়ে বিগত হাসিনা সরকারের সময়ে এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, মামলা, হামলাসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন তারা। ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ তারিখে ঢাকা নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী (দোকান নং- ১০৯) জামিল হোসেনের কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। জামিল বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সমর্থক হওয়ায় এ সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন বিবাদীরা। গত ২৭ জুলাই, ২০২৪ নিউমার্কেটের দোকান থেকে জামিল হোসেনকে অপহরনের চেষ্টা চালান তারা এবং পুনরায় চাঁদা দাবী করেন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ভীতসন্ত্রস্ত জামিল তৎক্ষনাৎ এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৩ অক্টোবর, ২০২৪ তিনি নিউমার্কেট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি নং- ১৪১। জিডির বিষয়টি জানাজানি হলে ২২ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে বাদীর মোহাম্মদপুরস্থ বাসার নিচে এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিবাদীরা। বাদী বিষয়টি স্বীকার করলে পুনরায় তাঁকে অপহরন চেষ্টা চালিয়ে বিবাদীরা ব্যর্থ হয়। ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ভুক্তভোগী জামিল হোসেন চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৬৪/৩৮৫/৫০৬(II)/১০৯ ধারায় অপরাধের উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখের মধ্যে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত ৭ আসামীর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল, মোহাম্মদ আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন, আলমগীর হোসেন, নাহিদুল ইসলাম একই পরিবারের সদস্য। অপর আসামীরা হলেন একই গ্রামের মোঃ আলম ও মোঃ মহসিন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী জামিল হোসেন বলেন, আমি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় সমর্থক ছিলাম। ২৭ জুলাই প্রথমে তারা দোকানে এসে আমাকে বেদম মারধর করে এবং দোকান থেকে অপহরণের চেষ্টা করে। অন্যান্য ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সাথে পুলিশের পোশাকধারী কয়েকজন লোক যুক্ত হয়। তারাসহ মারধর করে আমাকে দোকান থেকে নিয়ে যায়। আন্দোলনের সমর্থক হওয়ায় নানান ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। একটা উল্লখযোগ্য টাকা দেওয়ার পর সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যাই। সরকার পতনের পর একটি জিডি করি। জিডির বিষয়টি জানতে পেরে তারা পুনরায় অপহরণ চেষ্টা চালায়। আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং আমার কাছ হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া ও আমাকে হয়রানীর ক্ষতিপূরণ দাবী করছি। মামলার সাক্ষী ইব্রাহীম মিয়াজীও অপহরণ চেষ্টার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্তরা আওয়ামীলীগ সরকারের সমর্থক ছিলেন। বিগত সময়ে বাল্য বিয়ে না পড়ানোয় ইমামকে মারধর, মসজিদ কমিটি নিয়ে আলেমদের পেটানো, জমি দখল, সরকারী প্রকল্প আত্মসাৎ, মামলা বাণিজ্য, সালিশ বাণিজ্যসহ এলাকার মানুষজন তাদের দ্বারা ব্যাপক জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরই জের ধরে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর মোস্তাফিজুর রহমান দুলালদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল বলেন, বিষয়টি ডাহা মিথ্যা। তাদের সাথে আমাদের সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। তবে তিনি ৫ আগস্ট তার বাড়িতে হামলার বিষয়টি স্বীকার করেন। দুলালের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেনও মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।