অবশেষে ফরিদগঞ্জে খাল পুনরুদ্ধার কর্মসূচি শুরু

- আপডেট সময় : ০৬:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫ ১৭১ বার পড়া হয়েছে

একদিকে কৃষকের জমিতে পর্যাপ্ত পানি নেই, অন্যদিকে খালজুড়ে কচুরিপানার দখল—ফরিদগঞ্জে এমন জলাবদ্ধ পরিস্থিতিতে কৃষিকাজে দেখা দিয়েছিল মারাত্মক বিঘ্ন। মাছ মরে যাওয়া, পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়ানো এবং জলাশয় ব্যবস্থার ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে গত কয়েক বছর ধরে সেচপ্রকল্পভুক্ত খালগুলো হয়ে উঠেছিল নিষ্ক্রিয় ও পরিবেশ-অবান্ধব।
অবশেষে স্থানীয়দের দীর্ঘ আন্দোলন, আবেদন এবং মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর সেচপ্রকল্পভুক্ত খালসমূহে কচুরিপানা অপসারণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
ডাকাতিয়া নদীসহ সেচপ্রকল্প অন্তর্ভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার খাল ও বোরোপিট খালগুলো দীর্ঘদিন ধরেই কচুরিপানায় পরিপূর্ণ হয়ে পড়ে ছিল। এর ফলে:
জলধারা বন্ধ হয়ে খালগুলো বদ্ধ জলাশয়ে রূপ নেয়, পচা গন্ধ ছড়িয়ে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ে, জলজ প্রাণী বিশেষ করে মাছ মারা যায় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কৃষকদের সেচকার্য ব্যাহত হয়।
এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সিআইপি কৃষক সংগ্রাম কমিটি, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর কর্তৃক একাধিকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে জেলা প্রশাসক ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
তারই অংশ হিসেবে বুধবার (১৮ জুন ২০২৫) সকাল ১০টায় গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গল্লাক বাজার সংলগ্ন বোরোপিট খাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কচুরিপানা অপসারণ কাজ শুরু হয়।
কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান পাটওয়ারী, সিআইপি কৃষক সংগ্রাম কমিটির সদস্য রহিমা কলি ও আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।
ইউএনও সুলতানা রাজিয়া বলেন, “এটি একটি টেস্ট কেস। সফল হলে সারা উপজেলার সেচপ্রকল্পভুক্ত খালসমূহে একইভাবে কচুরিপানা অপসারণ করা হবে।”
সিআইপি কৃষক সংগ্রাম কমিটির সদস্য রহিমা কলি বলেন, “চাঁদপুরে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষকরা কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পাচ্ছে। এর আগেও লক্ষ্মীপুরে একইভাবে কচুরিপানা সরিয়ে সুফল পাওয়া গেছে।”
এই উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, খালের পানিপ্রবাহ সচল হবে এবং মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জীবন রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এটি শুধু একটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অভিযান নয়, বরং এটি একটি পরিবেশ-সচেতন ও কৃষকবান্ধব প্রশাসনিক পদক্ষেপ।