ফরিদগঞ্জ ০২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে দাবি, ওসির বিরুদ্ধে মানববন্ধনে হামলাকারীরা ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কেউ নয় ফরিদগঞ্জে পোনা অবমুক্ত কর্মসূচি উদ্বোধন ফরিদগঞ্জের খাজুরিয়ায় তারুণ্যের সমাবেশ ফরিদগঞ্জের চরকুমিরায় পানিতে ডুবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর মৃত্যু চট্টগ্রাম রিজিওনাল টি-২০ টুর্নামেন্টে ফরিদগঞ্জের সাদ্দামের বাজিমাত ১১ বছর আগের পরিপত্র দেখিয়ে ফরিদগঞ্জে এইচএসসি ব্যবহারিকে বাড়তি টাকা আদায় সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ফরিদগঞ্জের যুবক নিহত, পরিবারে শোকের মাতম ফরিদগঞ্জে হাজারো মানুষের দূর্ভোগ লাগবে অবশেষে নতুন ভাবে নির্মিত হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাটাখালী ব্রীজটি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ পরকীয়া আড়াল করতে মিথ্যা মামলা ফেসবুক হ্যাক থেকে বিকাশ প্রতারনা, সবখানেই মানুষের পাশে মাহিন উল হাসান শুভ

ফরিদগঞ্জে বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমের মৃত্যু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের “মিথ্যাচার” ফাঁস

শামীম হাসান
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫ ৯৮২ বার পড়া হয়েছে

 

ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোহিনুর বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। মৃত্যুর পর স্বজনদের অভিযোগ ছিল চিকিৎসকের অবহেলা। কিন্তু এরপর হাসপাতাল কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্য নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

হাসপাতালের অন্যতম মালিক ডা. সাদেকুর রহমান গণমাধ্যমে দাবি করেন—কহিনুর বেগমকে প্রথমে অন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করার পরও স্বজনরা তাঁকে আবার ডায়াবেটিক হাসপাতালে এনে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন। তিনি এমনকি মৃত্যুর পেছনে “ভিন্ন উদ্দেশ্য” থাকার ইঙ্গিতও দেন।

কিন্তু কহিনুর বেগমের ছেলে স্বপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন— “এটা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। ডায়াবেটিক ছাড়া আমরা আর কোথাও মাকে নেইনি। অন্য হাসপাতালে নিলে সেখানে অবশ্যই রেকর্ড থাকত।”

ঘটনার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত থেকে। সেদিন স্বপন ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত চিকিৎসক ডা. হুমায়ুনকে মায়ের অসুস্থতার কথা জানালে তিনি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী কোহিনুর বেগমকে সরাসরি ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় তার।

ডা. হুমায়ুন বলেন, “রোগী অন্য কোনো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কিনা—সে বিষয়ে আমার কোনো তথ্য নেই।” কিন্তু হাসপাতাল মালিক ডা. সাদেকুর রহমান দাবি করেন রোগী অন্য হাসপাতালে ছিলেন।

ডা. সাদেকুর রহমানের এই বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিকরা ফরিদগঞ্জের আরেক বেসরকারি হাসপাতাল ‘লাইফ জেনারেল’-এ যোগাযোগ করলে চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসে। হাসপাতালটির মার্কেটিং ও অ্যাডমিন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহেল মাহমুদ জানান, “আমাদের সফটওয়্যারভিত্তিক সিস্টেমে প্রতিটি ভর্তি রোগীর রেকর্ড থাকে। যাচাই করে দেখেছি, কহিনুর বেগম নামে গত কয়েকদিনে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি।”

এই তথ্য প্রকাশের পর স্পষ্ট হয়ে যায়—হাসপাতাল মালিকের বক্তব্য ছিল অসত্য। এর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার জবাবদিহি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হয়। কেবল একটি মৃত্যু নয়—এই ঘটনা আবারও সামনে এনেছে ফরিদগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বহীনতা ও মিথ্যাচারের ভয়াবহ চিত্র।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ফরিদগঞ্জে বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমের মৃত্যু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের “মিথ্যাচার” ফাঁস

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

 

ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোহিনুর বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। মৃত্যুর পর স্বজনদের অভিযোগ ছিল চিকিৎসকের অবহেলা। কিন্তু এরপর হাসপাতাল কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্য নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

হাসপাতালের অন্যতম মালিক ডা. সাদেকুর রহমান গণমাধ্যমে দাবি করেন—কহিনুর বেগমকে প্রথমে অন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করার পরও স্বজনরা তাঁকে আবার ডায়াবেটিক হাসপাতালে এনে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন। তিনি এমনকি মৃত্যুর পেছনে “ভিন্ন উদ্দেশ্য” থাকার ইঙ্গিতও দেন।

কিন্তু কহিনুর বেগমের ছেলে স্বপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন— “এটা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। ডায়াবেটিক ছাড়া আমরা আর কোথাও মাকে নেইনি। অন্য হাসপাতালে নিলে সেখানে অবশ্যই রেকর্ড থাকত।”

ঘটনার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত থেকে। সেদিন স্বপন ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত চিকিৎসক ডা. হুমায়ুনকে মায়ের অসুস্থতার কথা জানালে তিনি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী কোহিনুর বেগমকে সরাসরি ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় তার।

ডা. হুমায়ুন বলেন, “রোগী অন্য কোনো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কিনা—সে বিষয়ে আমার কোনো তথ্য নেই।” কিন্তু হাসপাতাল মালিক ডা. সাদেকুর রহমান দাবি করেন রোগী অন্য হাসপাতালে ছিলেন।

ডা. সাদেকুর রহমানের এই বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিকরা ফরিদগঞ্জের আরেক বেসরকারি হাসপাতাল ‘লাইফ জেনারেল’-এ যোগাযোগ করলে চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসে। হাসপাতালটির মার্কেটিং ও অ্যাডমিন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহেল মাহমুদ জানান, “আমাদের সফটওয়্যারভিত্তিক সিস্টেমে প্রতিটি ভর্তি রোগীর রেকর্ড থাকে। যাচাই করে দেখেছি, কহিনুর বেগম নামে গত কয়েকদিনে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি।”

এই তথ্য প্রকাশের পর স্পষ্ট হয়ে যায়—হাসপাতাল মালিকের বক্তব্য ছিল অসত্য। এর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার জবাবদিহি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হয়। কেবল একটি মৃত্যু নয়—এই ঘটনা আবারও সামনে এনেছে ফরিদগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বহীনতা ও মিথ্যাচারের ভয়াবহ চিত্র।