ফরিদগঞ্জ ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নে মহিলা সমাবেশ ফরিদগঞ্জে বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবিতে এবার মহিলা দলের মানববন্ধন পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ফরিদগঞ্জে বিএনপি কর্মীদের টানা সড়ক অবরোধ মনোনয়ন বিতর্কে উত্তপ্ত ফরিদগঞ্জ, এনডিপির প্রেস ব্রিফিংয়ে তোলপাড় ফরিদগঞ্জ রাজনীতি ‘আমি রোহিঙ্গা হয়ে আসিনি, ফরিদগঞ্জেই আমার জন্ম’ – লায়ন হারুনুর রশিদ চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে বিএনপির নেতৃত্ব সংকট ঘিরে অরাজকতা—এনডিপি চেয়ারম্যানের তীব্র সমালোচনা ফরিদগঞ্জে মাদক মামলা সাক্ষী হওয়ার খেসারত দিতে হলো এক যুবককে ইসলামী ব্যাংকে একচ্চত্র ও অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ বিমানবন্দর থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী নেই, কার্যক্রম বন্ধ, তবু চলছে মাদ্রাসার নামে চাঁদা সংগ্রহ

শিক্ষার্থী নেই, কার্যক্রম বন্ধ, তবু চলছে মাদ্রাসার নামে চাঁদা সংগ্রহ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫ ১২২ বার পড়া হয়েছে

 

শিক্ষক-শিক্ষার্থী নেই, নেই পাঠদান—কেবল একটি জরাজীর্ণ ভবন আর ঝুলন্ত সাইনবোর্ড। অথচ সেই সাইনবোর্ডের নাম ভাড়া দিয়ে চলছে সারাদেশে চাঁদাবাজির মহোৎসব। শিশুদের ভাড়া করে ‘দান অনুদান’ তোলার অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পোঁয়া গ্রামের কাটাখালি দারুল উলুম ক্বেরাতুল কোরআন মাদ্রাসা ও পীর মতিনিয়া এতিমখানাকে ঘিরে।

অভিযোগের তীর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মাওলানা তাজাম্মুল হোসাইনের ছেলে কে.এম নুরে আলম সিদ্দিকী ও হাফেজ কে.এম মোবারক হোসাইনের দিকে। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগও হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে প্রতিবছর সরকারি অনুদান পেত। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে শিক্ষার্থীরা চলে গেলে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক বছর আগে সরকারি অনুদানও বন্ধ হয়ে যায়।

কিন্তু এরপরও মাদ্রাসার নামের রসিদ বই ব্যবহার করে সারাদেশে টাকা তোলা অব্যাহত রয়েছে। কিশোরদের ভাড়া করে রাস্তায় নামানো হয় দান সংগ্রহের জন্য।

স্থানীয় কিশোর রায়হান জানান, তিনি কমিশনের ভিত্তিতে রসিদ দিয়ে টাকা তুলেছেন। এলাকার বাসিন্দা মিজান ও নুরুল ইসলাম খোকন বলেন, “মাদ্রাসায় কোনো কার্যক্রম নেই। তারপরও প্রতারণা চলছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

শাহীদা বেগম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, তার ছেলেসহ আরও কয়েকজন কিশোরকে টুপি-পাঞ্জাবি পরিয়ে রসিদ বই হাতে দিয়ে দান সংগ্রহে পাঠানো হয়। টাকা উঠানোর পর সামান্য অংশ শিশুদের দেওয়া হলেও বাকিটা নুরে আলম ও মোবারকের পরিবার নেয় বলে অভিযোগ তার।

অভিযোগ অস্বীকার করে নুরে আলম বলেন, “টাকা তোলার বিষয়ে আমি জানি না। আমরা এখন মাদ্রাসা চালাই না।” মোবারক হোসাইন জানান, “মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রতিবছর মাহফিল হয়।” তবে নাম ভাড়া দিয়ে টাকা তোলার বিষয়ে তিনি এড়িয়ে যান।

ফরিদগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক জুমায়েত হোসেন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, “পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষার্থী না পাওয়ায় সরকারি অনুদান বন্ধ করা হয়েছে। তারা এখনো যদি রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করে থাকে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “বিষয়টি দুঃখজনক। খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষার্থী নেই, কার্যক্রম বন্ধ, তবু চলছে মাদ্রাসার নামে চাঁদা সংগ্রহ

আপডেট সময় : ০৭:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫

 

শিক্ষক-শিক্ষার্থী নেই, নেই পাঠদান—কেবল একটি জরাজীর্ণ ভবন আর ঝুলন্ত সাইনবোর্ড। অথচ সেই সাইনবোর্ডের নাম ভাড়া দিয়ে চলছে সারাদেশে চাঁদাবাজির মহোৎসব। শিশুদের ভাড়া করে ‘দান অনুদান’ তোলার অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পোঁয়া গ্রামের কাটাখালি দারুল উলুম ক্বেরাতুল কোরআন মাদ্রাসা ও পীর মতিনিয়া এতিমখানাকে ঘিরে।

অভিযোগের তীর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মাওলানা তাজাম্মুল হোসাইনের ছেলে কে.এম নুরে আলম সিদ্দিকী ও হাফেজ কে.এম মোবারক হোসাইনের দিকে। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগও হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে প্রতিবছর সরকারি অনুদান পেত। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে শিক্ষার্থীরা চলে গেলে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক বছর আগে সরকারি অনুদানও বন্ধ হয়ে যায়।

কিন্তু এরপরও মাদ্রাসার নামের রসিদ বই ব্যবহার করে সারাদেশে টাকা তোলা অব্যাহত রয়েছে। কিশোরদের ভাড়া করে রাস্তায় নামানো হয় দান সংগ্রহের জন্য।

স্থানীয় কিশোর রায়হান জানান, তিনি কমিশনের ভিত্তিতে রসিদ দিয়ে টাকা তুলেছেন। এলাকার বাসিন্দা মিজান ও নুরুল ইসলাম খোকন বলেন, “মাদ্রাসায় কোনো কার্যক্রম নেই। তারপরও প্রতারণা চলছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

শাহীদা বেগম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, তার ছেলেসহ আরও কয়েকজন কিশোরকে টুপি-পাঞ্জাবি পরিয়ে রসিদ বই হাতে দিয়ে দান সংগ্রহে পাঠানো হয়। টাকা উঠানোর পর সামান্য অংশ শিশুদের দেওয়া হলেও বাকিটা নুরে আলম ও মোবারকের পরিবার নেয় বলে অভিযোগ তার।

অভিযোগ অস্বীকার করে নুরে আলম বলেন, “টাকা তোলার বিষয়ে আমি জানি না। আমরা এখন মাদ্রাসা চালাই না।” মোবারক হোসাইন জানান, “মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রতিবছর মাহফিল হয়।” তবে নাম ভাড়া দিয়ে টাকা তোলার বিষয়ে তিনি এড়িয়ে যান।

ফরিদগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক জুমায়েত হোসেন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, “পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষার্থী না পাওয়ায় সরকারি অনুদান বন্ধ করা হয়েছে। তারা এখনো যদি রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করে থাকে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “বিষয়টি দুঃখজনক। খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”