ফরিদগঞ্জে সরকারি হাসপাতালে রোগীর ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব কার?

- আপডেট সময় : ০৫:৪৯:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪ ২১০ বার পড়া হয়েছে

ফরিদগঞ্জে সরকারি হাসপাতালে রোগীর ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব কার?
বাড়ীতে হামলার শিকার হয়ে আহত হওয়ারপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছে রোগী। সেই রোগীকে হাসপাতালে এসে পুনরায় মারধর করেছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনা দেখে অন্যান্য রোগীদের বিতর আতঙ্ক দেখা দিলে ডাকচিৎকার শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসে প্রথমে সন্ত্রাসীদের থামানোর চেষ্টা করে। সন্ত্রাসীরা কাউকে তোয়াক্কা না করায় হাসপাতালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হয়ে রাকিবুল ইসলাম (২১) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে এমন নেক্কার জনক ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের ভবিষ্যত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা না ভেবে লিখিত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সরকারি হাসপাতালে আইনশৃৃঙ্খলার এমন অবনতি হলেও ওই যুবকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। থানা থেকে ছাড় পেয়ে ওই রোগীর পরিবারকে পুরনায় হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে রাকিবুল ইসলাম নামের যুবক। ফলে হাসপাতালের রোগী ও স্থানীয়দের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়েও।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার উত্তর কেরোয়া বেপারী বাড়িতে রবিবার (২৩ জুন) রাতে ওই বাড়ির শাহ আলম
(৬৫)’র সাথে তার ভাই আবদুর রব’র সাথে সম্পত্তিগত পূর্ব বিরোধের জের ধরে হামলা মারধরের ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার শাহ আলম স্থানীয়দের সহায়তায় ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ।
এদিকে সোমবার (২৪ জুন) প্রতিপক্ষ আবদুর রবের ছেলে রাকিবুল ইসলাম একদল বখাটেদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী শাহআলমের ওপর হামলা চালায়। এসময় হাসপাতালে অন্যান্যরোগীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত রাকিবুল ইসলাম নামে এক যুবককে আটক করে থানা পুলিশ।
সরকারি হাসপাতালে হামলার শিকার শাহ আলম বলেন, আমার ওপর যে হামলা হয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ সকলের কাছে হামলাকারী করাকিবুল ইসলামের বিচার চাই।
এদিকে রাকিবুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ারপর একদল দালাল তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পরে রাতে রাকিবুল ইসলামকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সেলর মো. আমিন মিয়াজী জানান, বিষয়টি আমি মিমাংসার স্বার্থে আমার জিম্মায় রাকিবকে নিয়ে আসছি।
হাসপাতালে হামলার শিকার শাহ আলম মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেলে বলেন, আমার ওপর যে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি প্রশাসনের বিচার বিভাগের কাছে উচিত বিচার চাই।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে রোগীর ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটস্থলে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাকিবুল ইসলাম নামে একজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। যুবককে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানান, প্রতিপক্ষ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় ওয়ার্ড কাউন্সেলনর ও রোগীর জামাতার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, আবাসিক ওয়ার্ডে রোগীর ওপর বহিরাগতরা হামলা করে। হাসপাতালের লোকজন রাকিবুল নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দেয়। থানা থেকে যুবককে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে লিখিত কোন ব্যবস্থা ও অভিযোগ করেছেন কি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা করিনি।
বিষয়টি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাহাদাৎ হোসেন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ওপর হামলার ঘটনা বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলবো।