ফরিদগঞ্জে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কর্তৃক হত্যা’র হুমকি, থানায় অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০১:৩৯:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩ ৪৭৮ বার পড়া হয়েছে
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন হর্নিদূর্গাপুর হাজী বাড়ীর মৃত্যু আশ্রাফ আলী মুন্সীর বড় সন্তান মোঃ এনায়েত উল্যাহ (৫৮)। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে দুই বোন-চার ভাই ও মা’য়ের দেখাশোনা করার দায়িত্ব অর্পিত হয় তার উপরে।
সবাইকে দেখাশোনার পাশাপাশি পরবর্তীতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তি ও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ভাই-বোনদের পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা করে দেন তিনি।
কিন্তু ছোট ভাই আব্দুল আজীজ জমি বন্টনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই বাধাগ্রস্ত করছিলো বড় ভাই মোঃ এনায়েত উল্যাহকে। দীর্ঘদিন ধরেই চলে পারিবারিক অভ্যন্তরীণ এ সমস্যা।
মোঃ আব্দুল আজীজ বেশ কিছুদিন হয় মৃত্যুবরণ করেছে। ভাইয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধীরে ধীরে পারিবারিক বিরোধ গুলো শিথিল হতে শুরু করে। ভুলতে থাকে সবাই নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলগুলোকে। কিন্তু আব্দুল আজীজের মৃত্যুর কিছুকাল পর থেকে তার স্ত্রী রেহানা বেগম (৪৫) শুরু করে মর্জিমাফিক চলাফেরা, পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে অমার্জিত ভাষায় কথপোকথন ও অসাধু আচরন। তার এ অসাধু আচরন থেকে বাদ পড়েনি পরিবারের সম্মানিত সদস্যরাও।
ধীরে ধীরে তার ব্যাবহার খ্যাতি লাভ করে এলাকাজুড়ে। এ নিয়ে জনে জনে ও এলাকাজুড়ে লোকালয়ে চলে অবিরত সমালোচনা। এভাবে নিজেদের ও পরিবারের সম্মান লুণ্ঠিত হতে দেখে ধাপে ধাপে তার সাথে কথা বলতে ও বুঝাতে চেষ্টা করে পরিবারের সদস্যরা। কোন কথায় কাজ হচ্ছেনা দেখে বিভিন্নভাবে বাধার চেষ্টা চালানো হলে গুম খুনের হুমকি দিয়ে বেড়ায় রেহানা বেগম। যা একজন নারীর অবক্ষয় বলে জানান রেহানা বেগমের ভাশুর মোঃ এনায়েত উল্যাহ।
মোঃ এনায়েত উল্যাহ বলেন, জীবিকার তাগিদে অর্থের প্রয়োজনে তিনি এলাকার বাহিরে থাকায় একাধিকবার তার ভাগের গাছের নারিকেল পেড়ে নিয়ে যায় তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রেহানা বেগম। পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমে তার বাগানের নারিকেল গাছগুলো বিশ হাজার টাকা নির্ধারিত মূল্যে এক বছর মেয়াদে ইজারা দেওয়া হয় ফয়সাল হোসেন নামক এক প্রতিবেশীর কাছে। কিন্তু রেহানা বেগম তার ছোট ভাই আরিফের যোগসাজশে ইজারাকৃত গাছের নারিকেল ডাব পেড়ে নিয়ে যায়। এসময় ইজারাদার ফয়সালের সাথে রেহানার হয় বাকবিতণ্ডা।
ইজারাদার ফয়সাল হোসেন জানান, নির্ধারিত মূল্যে বাগানের গাছগুলো ইজারা নেওয়া হলেও ফল নিয়ে যায় রেহানা বেগম। বাধা প্রদান করলে রেহানা বেগম কর্তৃক ফয়সালকে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ দেওয়া হয় মৃত্যুর হুমকি, লাশ গুম করে ফেলা হবে বলেও করেন মন্তব্য। এব্যাপারে ফয়সাল সহায়তা প্রার্থী হয় রেহানার ভাই আরিফের। আরিফের সহযোগিতায় স্থানীয় স্থানীয় চায়ের দোকানদার সুফিয়ান নামক এক ব্যাক্তির ঘরে নারিকেল গুলো সমাধনের প্রয়োজনে রাখাহয়। পরের দিন সমাধানের অপেক্ষা না করেই ঘর থেকে সকল নারিকেল নিয়ে যায় রেহানা। ফয়সাল পরিবারের কাছে তার ইজারার মূল্য ফেরত ও প্রশাসনের কাছে এর ন্যায্য বিচারের আবেদন জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে সমাধানমুখি প্রয়োজনীয় কথা বলতে গেলে মোঃ এনায়েত উল্যাহকেও গালাগালসহ মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হলে নিজ নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তিনি গত (২৫/০৭/২০২৩) ইং তারিখে অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি অভিযোগ করেন।
এদিকে রেহানা বেগমের সাথে কথা হলে, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যে বলে দাবী করেন তিনি।
ঘটনার তদন্তকারী অফিসার এ,এস,আই নাঈম এই প্রতিবেদককে জানান, সরেজমিন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। আইনি বিধি লঙ্ঘন হয় এমন সব কাজ থেকে বাদী বিবাদী উভয়কে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত ১৫ আগষ্ট পারিবারিক ভাবে বসে সমস্যা সমাধানের কথা থাকলেও জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে সেটিকে পিছানো হয়েছে। যদি পারিবারিক ভাবে এর কোন সমাধান না হয় তাহলে দেওয়ানী আদালতে কোর্টে প্রেরণ করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।